উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আবারও তিস্তা অববাহিকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এদিকে উজানে বৃষ্টির কারণে ভারত গজলডোবা ব্যারেজের সব গেট খুলে দেওয়ায় গত দুদিন থেকে পানি ব্যারেজ পয়েন্টে ওঠানামা করছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়েছে। যা এখন বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে, মঙ্গলবার রাত ৯টার পর পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়ে ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত ৪৮ ঘণ্টায় ব্যারেজ পয়েন্টে পানি ওঠানামার কারণে তিস্তা অববাহিকা এলাকার সবাইকে সর্তক রাখা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা জানান, সার্বিক বিবেচনায় মনে হচ্ছে যেকোনো সময় ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করবে। এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তা ধরলার ৬৩ চরে আবারও বন্যার আতঙ্কে পড়েছেন প্রায় অর্ধ লাখেরও বেশি মানুষ।
গত ২ মাস আগে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ঘরে ফিরে ছিল চরের মানুষজন। প্রমত্তা তিস্তা শুকিয়ে হয়েছিল খাঁ খাঁ। কিন্তু গত ২ দিন দেশের অভ্যন্তরে ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় তিস্তা অববাহিকায় আবারও বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চলতি বছরের জুলাই মাসের ৫ তারিখে সর্বশেষ তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। মঙ্গলবার দুুপুর ১২টা থেকে আবারও পানি বাড়তে শুরু করেছে। বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও তিস্তাতে পানি প্রবাহ বেড়েছে।
বুধবার সকাল থেকে পানি কিছুটা কমলে বিকেল থেকে আবারও বাড়তে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির কারণে তিস্তার চরে বাস করা মানুষগুলোর কপালে পড়েছে চিন্তার ভাজ।
তিস্তা বিধৌত সানিয়াজান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, দুমাস ভালোই ছিলাম। পানি নেমে যাওয়ায় চরবাসীরাও স্বস্তিতে ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে আবারও বেড়েছে পানি। বুধবার সকালে কমলেও বিকেল থেকে পানি বাড়ছে। যেকোনো সময় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। পানি বাড়লেই তিস্তা অববাহিকায় বন্যা দেখা দেবে। ফলে চরের ১২-১৪ হাজার মানুষকে নিয়ে আবারও বেকায়দায় পড়তে হবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, তিস্তার পানি ব্যারেজ পয়েন্টে ওঠানামা করছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী যেকোনো সময় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এছাড়া ভারত গজলডোবা ব্যারেজের সব গেট খুলে দেওয়ায় তিস্তায় পানি বাড়ছে।