নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ইয়াসমিন হত্যার রায়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে নওগাঁয়।
১৯৯৫ সালের ২৩ আগস্ট মাকে দেখার জন্য ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরছিল কিশোরী ইয়াসমিন এবং ভুল করে ঠাকুরগাঁওগামী নৈশকোচ হাসনা এন্টারপ্রাইজে উঠে পড়ে। সেই বাসটি ভোরের দিকে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রংপুরের সংযোগ মোড় দশমাইল এলাকায় চায়ের স্টলে বাসের সুপারভাইজার নামিয়ে দিয়ে চায়ের দোকানদারকে ইয়াসমিনকে দিনাজপুরগামী একটি বাসে তুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
কিছুক্ষণ পরই সেখানে পৌঁছে টহল পুলিশের পিকআপ ভ্যান। পুলিশ ভ্যানচালক অমৃত লাল বর্মণ, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মঈনুল এবং আব্দুস সাত্তার চায়ের দোকানে বেঞ্চে বসে থাকা ইয়াসমিনকে দিনাজপুর শহরে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জোর করে পুলিশ ভ্যানে তুলে নেয়। এরপর তারা দশমাইলসংলগ্ন সাধনা আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইয়াসমিনকে গণধর্ষণের পর নিমর্মভাবে হত্যা করে তার মৃতদেহ রাস্তার পাশে ফেলে রেখে চলে যায়।
দিনাজপুর কোতোয়ালি পুলিশ ‘একজন অজ্ঞাতপরিচয়ের লাশ উদ্ধার’ মর্মে ঘটনাটি সাজিয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা করে এবং লাশের তড়িঘড়ি ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বালুবাড়ি শেখ জাহাঙ্গীর গোরস্তানে দাফন করে। পুলিশ ও প্রশাসনের রহস্যময় আচরণ জনমনে কৌতূহল ও বিক্ষোভ শতগুণে জাগিয়ে তোলে।
ইয়াসমিন হত্যা নিয়ে আজ (২৫ আগস্ট) সকালে সাড়ে ১১ টায় শহরের মুক্তির মোড়ে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম নওগাঁ জেলা শাখার উদ্যোগে কর্মসূচির আয়োজন করে। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নারীরা ঘরে-বাইরে ভিন্ন মাত্রায় ভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। নারীর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনের এই মাত্রা এখনো কমেনি বরং অনেক ক্ষেত্রে বেড়েছে। এই নির্যাতন ও সহিংসতা বন্ধে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা নারী নির্যাতন ও সব ধরনের সহিংসতা বন্ধ এবং দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রোন্ডের সভাপতি কালিপদ সরকার, নওগাঁ জেলা ছাত্র ফ্রোন্ডের মিজানুর রহমান, সোনালী ইসলাম, সভাপতিত্ব করেন মহিলা ফেরামের সাধারণত সম্পাদক নাসরিন আরা।