পাবনার ঈশ্বরদীতে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযাগ পাওয়া গেছে। গত শনিবার রাতে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গ্রামে ঐশি খাতুন (২০) নামে গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বছর ২৫ জানুয়ারি সাহাপুর ইউনিয়নের চর আওতাপাড়া গ্রামের মাহাবুল ইসলামের মেয়ে ঐশি খাতুনের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রাম আওতাপাড়া নুরজাহান স্কুল সংলগ্ন হারুন প্রামাণিকের ছেলে জাহিদ হোসেনের (২৫) বিয়ে হয়।
মামলার বাদী ঐশির মা শাহানারা খাতুন তার লিখিত এজাহারে জানান, বিয়ের সময় নগদ টাকা, আসবাবপত্র নেয় জামাই জাহিদ। এরপরও যৌতুকের জন্য ঐশিকে প্রায়ই মারধর করতো। মেয়ের সুখের জন্য জাহিদকে নগদ ৩ লক্ষ টাকা এবং ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোটর সাইকেল কিনে দেই। এরপরও নগদ আড়াই লক্ষ টাকার জন্য স্ত্রী ঐশির উপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে জাহিদ।
এজাহারে আরো বলা হয়, শনিবার সন্ধ্যায় আবারও টাকার জন্য ঐশির উপর নির্যাতন শুরু করে জাহিদ। এ সময় জাহিদ তার মা মরিয়ম (৫০) ভাই মকলেছুর রহমান (৩২) ও ভাবী রেশমা খাতুন (২৮) এর সহযোগিতায় পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে ঐশিকে হত্যা করে। ঐশির লাশ ঘরে ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়। বাড়ির পার্শ্ববর্তী লোকজনের নিকট থেকে খবর পেয়ে ঐশিকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নিহত ঐশির ৭ মাস বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছেন। তার স্বামী জাহিদ রূপপুর পারমাণবকি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সাব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত।
তবে নিহত ঐশির খালা রুপা খাতুন বলেন, যৌতুকের বিষয় নয়, জাহিদ পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল। যার কারণে প্রায়ই স্ত্রী সাথে তার ঝগড়া বিবাদ হতো। তিনি বলেন, ঐশির মৃত্যুর পর ফ্যানের ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচারণা চালানো হয়।
ঈশ্বরদী থানার ওসি শেখ নাসির উদ্দিন জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য বোঝা যাবে।