করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণসীমা কী অতিক্রম করেছে বাংলাদেশ? এখন কোন পর্যায়ে আছে? এসব প্রশ্ন অনেকেরই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো বিপদসীমার মধ্যেই আছে বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান খুব একটা তারতম্য না ঘটলেও দীর্ঘদিন একই মাত্রা অব্যাহত থাকায় বিপদ বয়ে আনতে পারে আগামী দিনগুলোতে। তাই সরকারের দায়িত্বশীল ভূমিকার পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হওয়ারও পরামর্শ চিকিৎসকদের।
শুরুটা ছিলো চীন থেকে, তবে করোনার চরম ভয়াবহতা ধরা পড়ে ইউরোপে এসে। বিশেষ করে ফ্রান্স আর ইতালির আক্রান্ত-মৃত্যুর পরিসংখ্যান, বেশ দুঃচিন্তায় ফেলে দিয়েছিলো বিশ্ববাসীকে। আর সে সময় করোনা পরিসংখ্যান টেবিলে তলানিতেই ছিলো বাংলাদেশ। তবে এ কয়েক মাসে পাল্টিয়েছে পরিস্থিতি। চীন এখন ৩৪ নম্বরে। আর আক্রান্তের সংখ্যায় ফ্রান্স-ইতালিকেও ছাড়িয়ে বাংলাদেশ এখন, টপ ফিফটিনে!
এরপরেও বাজার কিংবা রাস্তাঘাটের পরিস্থিতি দেখে বোঝার উপায় নেই, চলছে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ দুঃসময়! আপাতদৃষ্টিতে স্বাভাবিক মনে হলেও বাস্তবতা হলো, থেমে নেই, করোনার সংক্রমণ-মৃত্যুর পরিসংখ্যান। গেল দুই সপ্তাহর হিসেবে দেখা যায়, দেশের করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, ৩২ হাজার ২শ’ ৬৯ জন, যা তারও আগের দু’সপ্তাহ থেকে ১১শ’ ৩৪ জন বেশি। বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও। আগের দু’সপ্তাহ চেয়ে পরের দু’সপ্তাহে মারা গেছে একশ ১২ জন বেশি। আর এ সময়ের মধ্যে ২৩ শে আগস্ট ছাড়া এক দিনও আক্রান্তের হার দু’হাজারের নিচে নামেনি।
আইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা: মোস্তাক হোসেন জানান, বর্ষা এবং বন্যা চলে গেলে আমরা যদি আবার অসাবধান হয়ে যাই তা হলে করোনার সংক্রমণটা আবার বেড়ে যাবে। আমাদের সবসময় সর্তক থাকতে হবে সংক্রমণটা যেন নতুন করে আমাদের দেশে না আসে। তিনি বলেন, দেশে সংক্রমণ উচ্চহারে হওয়ার সম্ভবনা এখনো রয়েছে।
বিএসএমএমইউর সাবেক উপাচার্য ড. নজরুল ইসলাম জানান, আমাদের করোনার স্যাম্পল বেশি না। ১৩ হাজার, ১৪ হাজার, ২৪ হাজার। যদি করোনার স্যাম্পলটা বেশি হতো তা হলে বোঝা যেতো আক্রান্তের সংখ্যা। তিনি বলেন, আমাদের প্রথম স্টেপ এখনো শেষ হয়নি দ্বিতীয় স্টেপ শুরু হতে এখনো দেরি হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছ্নে, এমনটা আগামী কয়েক মাস অব্যাহত থাকলে, পরিস্থিতি যে খুব একটা ভালো হবে না, তা বলাই যায়। গতানুগতিক পিক, অফ-পিকের প্রশ্নে বাংলাদেশকে এখনো যাচাই করা সম্ভব নয় বলে জানান তারা। কিন্তু কেনো?
তারা বলছেন অর্থনৈতিক বাস্তবতা হয় তো রাস্তায় নিয়ে এসেছে মানুষকে। কিন্তু তার আগে ভাবতে হবে নিজের জীবন নিয়ে, দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তা না-হলে, বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হবার মতোও শঙ্কা করছেন তারা।