কাঠের দুটি টুকরো ভেতরে রেখেই ১২ বছরের শিশু রাকিবের হাতে সেলাই করেন মাদারীপুর সদর হাসপাতালের এক নার্স। দুই মাস অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগের পর অস্ত্রোপচার করে বের করা হয়েছে কাঠের দুই টুকরো। দোষী নার্সের শাস্তির দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী শিশুটির স্বজনরা।
গেলো ১৫ই মে ঘরের মাচা থেকে পা পিছলে পড়ে যায় মাদারীপুর সদরের আলম সরদারের ছেলে রাকিব। এ সময় গাছের দুটি টুকরো তার হাতের ভেতর ঢুকে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায় তারা বাবা।
তবে, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না কোনো চিকিৎসক। ছেলের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে নার্স তোতা মিয়ার সাহায্য নেন রাকিবের বাবা। কিন্তু কাঠের টুকরো ভেতরে রেখেই দুই সহযোগীকে নিয়ে রাকিবের হাত সেলাই করে দেন ওই নার্স।
বাড়ি ফেরার পর থেকেই শুরু হয় তীব্র যন্ত্রণা। দুই মাস পরও ব্যাথা না কমায় শিশুটিকে নেয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অস্ত্রোপচার করে বের করা হয় কাঠের টুকরো দুটি। শারীরিক যন্ত্রণার পাশাপাশি অর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করেছে শিশুটির বাবা। ভুক্তভোগী শিশুর বাবা আলম সরদার বলেন, ‘দুই মাস পর্যন্ত ড্রেসিং করেছি, কোন কাজ হয় না। ভেতরে কাঠের টুকরা ছিল তাতো জানি না। যারা এ ধরণের কাজ করে তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শান্তি চাই।’ ভুক্তভোগী শিশু রাকিব সরদার জানান,’শুকাতো না। যন্ত্রণা হতো। পরে ফরিদপুর যেয়ে অপারেশন করছি। তখন কাঠ পাওয়া গেছে ভেতরে।’
তবে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তোতা মিয়া। মাদারীপুর সদর হাসপাতালের নার্স মোহাম্মদ তোতা মিয়ার দাবি,’তখন কাঠ পাইনি। মাংসের সঙ্গে কাঠ মিশে যেতে পারে। থাকতে পারে কাঠ।’
এদিকে, সিভিল সার্জন বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার অভিযোগ করলে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. শফিকুল ইসলাম জানান, ‘দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।’
ঘটনার দিন জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকের শাস্তিও দাবি করেছেন স্বজনরা।