গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় পূর্ববিরোধের জেরে জমিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া নিয়ে চাচাত ভাই-বোনকে হত্যা করার মামলায় তিন সহোদরের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে মামলার অপর তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
মামলা দায়েরের ৪ বছর পর বৃহস্পতিবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত ও খালাস পাওয়া আসামিরা উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পূর্বঝিনিয়া গ্রামের হযরত আলী (৩৯), হাফিজার রহমান (৩৬) ও আজিজল হোসেন (৩১)। তারা সকলেই মামলার প্রধান আসামি মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন মৃত আবুল হোসেনের স্ত্রী জরিনা বেগম, হযরত আলীর স্ত্রী গোলেনুর বেগম ও হাফিজারের স্ত্রী মোর্শেদা আকতার। এ ছাড়া মামলা চলাকালে প্রধান আসামি আবুল হোসেনের মৃত্যু হয়।
গাইবান্ধা জেলা জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম শফিক জানান, পূর্বঝিনিয়া গ্রামের মফিজল হকের সঙ্গে তার চাচাত ভাইদের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ ও মামলা চলে আসছিল। মামলায় মফিজল রায় পেয়ে জমি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু বিরোধপূর্ণ জমিতে লোহার তারে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখেন প্রতিপক্ষ আবুল হোসেনরা।
২০১৬ সালের ১২ নভেম্বর ঘটনার দিন ওই জমিতে যান মফিজল হকের ছেলে, ছেলের বউ ও ভাতিজাসহ পরিবারের কয়েকজন। তখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন মফিজলের ছেলে তসলিম, ভাতিজি মর্জিনা, ছেলের বউ জমিলা বেগম ও ভাতিজা আলমগীরসহ ছয়জন। হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তসলিম ও ভাতিজি মর্জিনা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় মফিজল হক বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ থানায় সাতজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এদিকে, মামলার রায়ে বাদীর পরিবার ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সন্তোষ প্রকাশ করলেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামির পরিবার-স্বজন ও তাদের আইনজীবীরা। আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুয়ারা মো. সিদ্দিকুর ইসলাম বলেন, ‘মামলার এজাহার ও সাক্ষ্য-প্রমাণে আদালতের সার্বিক পর্যালোচনায় রায় ঘোষণা করা হয়নি। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করলে অবশ্যই আসামিরা ন্যায়বিচার পাবেন।’
দ্রুতই এ নিয়ে আপিল করবেন বলেও জানান তিনি।