ads
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

জোয়ারের পানিতে ভাসছে উপকূল

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০
  • ১৭ বার পঠিত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও অমাবস্যার প্রভাবে টানা বৃষ্টি এবং নদনদীতে অতি জোয়ারের পানির চাপে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকা বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে সাত ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকায় চলছে জোয়ার-ভাটার খেলা। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। জোয়ারের পানি ঢুকে পড়লে এসব এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চরমে ওঠে। ভাটার পানি নামলেও দুর্ভোগ কমছে না। পানিতে ভেসে গেছে হাজারো পুকুর ও মাছের ঘের। নষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাট, কাঁচা ঘরবাড়ি ও ফসলের ক্ষেত।

খুলনা ব্যুরো ও কয়রা :গত কয়েক দিনের বৃষ্টি এবং নদীতে জোয়ারের পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ফের বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে খুলনার কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম। বুধবার থেকে বাঁধে ভাঙন ও বাঁধ উপচে পানি গ্রামে প্রবেশ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার নতুন করে কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কয়রা খালের বাঁধ ভেঙে আরও তিনটি গ্রামে লোনা পানি ঢুকে পড়েছে। আগের দিনের ভাঙন ও জোয়ারে বাঁধ উপচে আসা পানিতে বর্তমানে পানির নিচে রয়েছে সাতটি গ্রাম।

অন্যদিকে পাইকগাছা উপজেলার গড়ইখালী বাজারের পাশে বেড়িবাঁধে বৃহস্পতিবার সকালে ভাঙন দেখা দেয়। এতে পুরো বাজার এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। বুধবার সকালে সোলাদানা ইউনিয়নের বয়ারঝাঁপা এলাকায় ভেঙে যাওয়া বাঁধ রাতে মেরামত করেছে উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু জোয়ারের পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাতক্ষীরা-২ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর থেকে যে দুটি স্থান দিয়ে নদীর পানি ওঠানামা চলছে সেখানে কাজ করার জন্য সেনাবাহিনী দায়িত্ব নিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা সেখানে অস্থায়ী বাঁধ দেওয়ার চেষ্টা করছি। একই সঙ্গে বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।

বাগেরহাট : অতিবৃষ্টির ফলে বাগেরহাটে বেশির ভাগ এলাকার সড়কে পানি জমেছে। জেলার চিতলমারী, ফকিরহাট এলাকায় বিভিন্ন ঘের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। চিতলমারী উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান জানান, আমি পাঁচ একর জায়গা অন্যের জমি লিজ নিয়ে ঘের করি ও ঘেরের পাশে সবজি চাষ করি; যা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। কয়েকদিন ধরে অতিবৃষ্টির কারণে আমার ঘের পানিতে ডুবে গেছে। চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি।

শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) : বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে শ্যামনগরের নেবুবুনিয়া এলাকায় উপকূল রক্ষা বাঁধ খোলপেটুয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভাঙন কবলিত অংশের ছয়টি পয়েন্ট দিয়ে পানির প্রবেশ অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা জোয়ারের পানিতে ডুবে যাচ্ছে। আম্পান তাণ্ডবের পর একই এলাকায় রিং বাঁধ মেরামত করা হলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে জোয়ারের পানির চাপে আবারও ভাঙনে মুখে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

ভোলা: মেঘনা নদীর জোয়ারের চাপে ভোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে প্রায় দুই হাজার পরিবার। বৃহস্পতিবার ভোররাতে সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের মুরাদ ছবুল্লা গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়। সকাল থেকে ভোলায় বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় উত্তাল মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া বেড়িবাঁধের বাইরে আরও ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি ও ভোলা-বরিশাল রুটে লঞ্চ চলাচল।

লক্ষ্মীপুর : বৈরী আবহাওয়ায় উত্তাল মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটসহ চার-পাঁচ ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে লক্ষ্মীপুর মজুচৌধুরীর হাটসহ নিম্নাঞ্চল। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় বন্ধ হয়েছে লক্ষ্মীপুর-ভোলা রুটের ফেরি চলাচল। চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে যাত্রীরা। অন্যদিকে প্রবল জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে বেড়িবাঁধের বাইরের ১৫টি গ্রাম। জোয়ারের পানিতে ফের হুমকির মধ্যে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ। জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লক্ষ্মীপুর সদরের চররমণীমোহন, রায়পুর, রামগতি ও কমলনগর এলাকার ঘরবাড়ি।

হাতিয়া (নোয়াখালী) : উপজেলার নিঝুমদ্বীপ, নঙ্গলিয়া, নলেরচর, কেয়ারিংচর, নলচিরা, সুখচর, ঢালচর, তেল্লারচর, জাগলারচর, বদনারচর, তমরদ্দি, চরঈশ্বর, সোনাদিয়া ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম এবং হাতিয়া পৌর এলাকার চরকৈলাশগ্রাম বেজুগালিয়াগ্রাম লক্ষ্মীদিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকা এখন পাঁচ-সাত ফুট পানির নিচে রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের পরে অস্বাভাবিক জোয়ারে হাতিয়ার নলচিরা, সুখচর, চরঈশ্বর, তমরদ্দি, সোনাদিয়া, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের এবং প্রশাসনিক এলাকা নলেরচর ও বয়ারচরের নিম্নাঞ্চল ডুবে যায়।

বেতাগী (বরগুনা) : বরগুনার বেতাগীতে প্রবল বৃষ্টিপাত ও অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এত উপজেলার মোকামিয়া, বদনীখালী, কালিকাবাড়ি, ঝোপখালীসহ বেতাগী পৌরসভার রাস্তাঘাট ও বাজার পানিতে ডুবে যায়।

বাউফল (পটুয়াখালী) : তেঁতুলিয়া ও লোহালিয়া নদীর তীরে বেড়িবাঁধ না থাকায় বাউফল উপজেলার ধুলিয়া, কেশবপুর, চন্দ্রদ্বীপ, কনকদিয়া, কাছিপাড়া, বগা, নাজিরপুর- এ সাতটি ইউনিয়নের ৫০ গ্রাম বৃষ্টি ও অতি জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। জোয়ারের প্রভাবে বগা নদীর ফেরির গ্যাংওয়ে ডুবে গেছে।

আমতলী (বরগুনা) : ৮০ বছরেও নির্মাণ হয়নি আমতলী উপজেলার গাজীপুর নৌবন্দরের শহর রক্ষা বাঁধ। ফলে জোয়ার-ভাটার সঙ্গে যুদ্ধ করে চলতে হয় ওই বন্দরের ব্যবসায়ীসহ বসবাসকারীদের। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, তিন দিকে দুটি নদীবেষ্টিত বন্দর গাজীপুর। দুই নদীর জোয়ারের পানিতে পুরো বন্দর তলিয়ে গেছে। বন্দরের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। মধ্য জোয়ার থেকে ভাটার আগ পর্যন্ত তাদের ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ থাকে।

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

Prayer Time Table

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:২৪
  • ১২:১৬
  • ১৬:১১
  • ১৭:৫১
  • ১৯:০৬
  • ৬:৩৭
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওয়ালি উল্লাহ
নির্বাহী সম্পাদক
নিউজ রুম :০২-৯০৩১৬৯৮
মোবাইল: 01727535354, 01758-353660
ই-মেইল: editor@sristybarta.com
© Copyright 2023 - SristyBarta.com
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102