রাজধানীর টিকাটুলি এলাকায় একটি আবাসিক ভবনের নিচ তলায় বিপুল পরিমাণ উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক মজুদের সন্ধান পেয়েছে র্যাব। এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে ইয়াছিন সাইন্টিফিক স্টোরের মালিক আব্দুস ছালাম (৬২), ম্যানেজার নুর হোসেন (৬৫) ও কর্মচারী শাহীনকে (৩২) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে বিসিআইসি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ২৭ ও ১৮ নম্বর হাটখোলা রোডে অভিযান চালিয়ে ৫টি গোডাউন সিলগালা করেছে র্যাব-৩ এর একটি দল।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি হাটখোলা রোডের ২৭ রাসেল সেন্টারের নিচ তলায় ইয়াছিন সাইন্টিফিক স্টোর এবং যমুনা সাইন্টিফিক স্টোর এর ভিতর লাইসেন্সবিহীন বিপুল পরিমাণ কেমিক্যাল, উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক দ্রব্য, দাহ্য পদার্থ এবং বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত টুলুইন নামক একটি বিশেষ পদার্থ গুদামজাত রয়েছে। পরে আরও একটি ভবনে আরও তিনটি গোডাউনের সন্ধান পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, একটি আবাসিক এলাকায় ইথানল, আইসোপ্রোপাইল এ্যালকোহল, সালফিউরিক এসিড, নাইট্রিক এসিড, হাইড্রোফ্লোরিক এসিড, ফরসিক এসিড, হাইড্রো ক্লোরিক এসিড, ড্রাই মিথাইল সালদো, মিথানল এবং টুলুইনের মতো উচ্চমাত্রার রাসায়নিক ও বিস্ফোরক মজুদের কারণে পুরাণ ঢাকার নিমতলি ও চকবাজারের চুড়িহাট্টার মতো ভয়াবহ ঘটনার জন্ম দিতে পারতো। এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে।
র্যাব বলছে, দুপুরে টিকাটুলি অভিসার সিনেমা হলের পাশের ভবনটিতে শুরু হয় অভিযান। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
গ্রেফতারকৃতরা ম্যাজিস্ট্রেট, বিসিআইসি এবং নারকোটিক্স এর কর্মকর্তাদের সামনে তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে লাইসেন্স বিহীনভাবে এসব অবৈধ কেমিক্যাল, হাইলি এক্সপ্লোসিভ পদার্থ, দাহ্য পদার্থ এবং বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন বিপদজ্জনক পদার্থ গুদামজাত করে আসছে। এই সকল পদার্থ অত্যন্ত বিপদজ্জনক যা যে কোন মূহুর্তে আবাসিক এলাকায় যেকোন দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে যা জানমালের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারে আবাসিক ভবনে অবৈধভাবে রাখা কেমিক্যাল বিস্ফোরণে ৭৮ জন নিহত হন। এ ঘটনার পর বেশকয়েক দিন কেমিক্যাল গুদাম সরাতে অভিযান চালায় বিভিন্ন সংস্থা।