করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় ইউনিসেফের আর্থিক সহায়তায় কক্সবাজারের টেকনাফে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট আইসোলেশন ও চিকিৎসা কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লাগোয়া আইসিডিডিআরবির প্রাঙ্গণে এক অনুষ্টানে এই আইসোলেশন ও চিকিৎসা কেন্দ্র উদ্বোধন ঘোষনা করেন প্রধান অতিথি টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্টানে বক্তব্য রাখেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের সমন্বয়কারী ড. আবু তোহা এম আর এইচ ভূঁইয়া, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমু হোজুমি, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল, আইসিডিডিআরবির সিনিয়র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ড. জিয়াউল ইসলাম, ডব্লিউএইচওর ড. মুকেশ প্রজাপতি, ইউএনএফপির রোসেলিডা রাফায়েল, ইউনিসেফের এজাতুল্লাহ মাজিদ, আইসিডিডিআরবি প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ড. মো. মুনিরুল ইসলাম ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাবেদ ইকবাল চৌধুরী।
এসময় অনলাইনে সংযুক্ত হন আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক প্রোফেসর জন ডি ক্লেমেন্স এবং ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ।
এদিকে অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় ‘সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপাইরেটরি ইনফেকশন আইসোলেশন অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার (এএআরআইআইটিসি) নামের চিকিৎসা কেন্দ্রটি ইউনিসেফের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালনা করবে আইসিডিডিআরবি।
এ বিষয়ে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমু হোজুমি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এ আক্রান্তের সংখ্যা এখনও বেড়েই চলেছে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নজিরবিহীন এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে ইউনিসেফ নিবিড়ভাবে বাংলাদেশ সরকার এবং উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে। এ ছাড়াও ইউনিসেফ জাতীয় পর্যায়ে এবং একইসঙ্গে কক্সবাজারে বসবাসরতদের মাঝে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ এবং আক্রান্তদের চিকিৎসায় সহায়তা দিতে গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সামগ্রী ক্রয় করছে।’
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম বলেন, ‘জীবন বাঁচাতে ইউনিসেফ এবং আইসিডিডিআরবির সঙ্গে হাতে হাত রেখে একসঙ্গে কাজ করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। কোভিড-১৯ আইসোলেশন ও চিকিৎসা কেন্দ্রটি এক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। চিকিৎসা কেন্দ্রটি টেকনাফ উপজেলায় বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা উভয় জনগোষ্ঠীতে কোভিড-১৯ শনাক্ত ও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের অক্সিজেন থেরাপিসহ চিকিৎসা সেবা প্রদান করবে। এটি প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টায় খোলা থাকবে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়ের সমন্বয়কারী ড. আবু তোহা এম আর এইচ ভূঁইয়া বলেন, ‘জনসংখ্যার ঘনত্ব খুব বেশি হওয়ার কারণে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির কোভিড-১৯ মহামারির জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। এই কেন্দ্র বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা উভয় জনগোষ্ঠীকে গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রদান করবে।’
আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. জন ডেভিড ক্লেমেন্স বলেন, ‘এই ব্যতিক্রমী সময়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে ইউনিসেফের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পেরে আমরা গর্বিত। এই সঙ্কট মোকাবিলায় আমাদের যেসব কর্মী অগ্রভাগে রয়েছেন তাদের প্রচেষ্টাকে আমরা সাধুবাদ জানাই।’