কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে এক কিশোরী। এ ঘটনায় মামলা হলে ওই কিশোরীর আপন চাচাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরইমধ্যে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয় ধর্ষণের শিকার কিশোরী। তবে ঘটনার শুরু থেকেই অভিযুক্ত চাচা বিষয়টি অস্বীকার করলেও পুলিশের উদ্যোগে শিশুটির ডিএনএ টেস্ট করা হয়। আর এতেই প্রমাণিত হয় চাচাই ধর্ষণ করেছে ওই কিশোরীকে।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে ২০১৯ সালের নভেম্বরে।
জানা গেছে, ওই কিশোরীর মা ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য কুমিল্লার একটি ক্লিনিকে ৫-৬ দিন ভর্তি ছিলেন। তখন বাড়িতে কেউ না থাকায় মেয়েটিকে হত্যার ভয় দেখিয়ে লাগাতার ধর্ষণ করে আপন চাচা। মেয়েটি ভয়ে কাউকে কিছুই জানায়নি। কিছুদিন পর তার মা মারা যান। এরইমধ্যে ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হয়। স্থানীয় সালিসে ওই কিশোরী এ ঘটনার জন্য তার চাচাকে দায়ী করে। কিন্তু ঘটনাটি পুরোপুরি অস্বীকার করে তার চাচা। এ ঘটনায় ১৩ জুন আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাবা। ১৪ জুন পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। কিন্তু পুলিশের কাছে ও আদালতে বারবারই সে ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে।
জুন মাসের শেষদিকে ওই কিশোরী একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। পরে নাঙ্গলকোট থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যস্থতায় শিশুটিকে নোয়াখালীর চৌমুহনীর এক নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছে দত্তক দেয়া হয়। পরে শিশুটির ও ধর্ষকের ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় পুলিশ। এরইমধ্যে ধর্ষক জামিনে মুক্ত হলে তার কিছু আত্মীয়-স্বজন ফুলের মালা পরিয়ে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে গ্রামে নিয়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে ভূরিভোজেরও আয়োজন করে ধর্ষক।
মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ধর্ষককে ফুলের মালা পরিয়ে মোটরশোভাযাত্রা করে বাড়ি নেয়ার ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নজর এলে জামিনের ১৫ দিন পরই বিচারক ওই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির হতে বলেন। পরে তার জামিন বাতিল করে ফের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নাঙ্গলকোট থানার এসআই আখতার হোসেন বলেন, ডিএনএ পরীক্ষার ফল আমাদের হাতে এসেছে। শিশুটির ডিএনএ ওই কিশোরীর ধর্ষক চাচার সঙ্গে মিলে গেছে। তার বিরুদ্ধে দ্রুত আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হবে।