গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’ উদ্ভাবক দলের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীলের দ্রুত ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত রয়েছে।
বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ বিবেচনার ওপর নির্ভর করছে। বর্তমানে তিনি ট্যুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে আছেন। তবে গণবিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার কাজ না করে সময় পার করছেন লেখালেখি করে। সভাবতই প্রশ্ন সামনে আসছে ড. বিজন কুমার শীল এ অবস্থায় কি সিদ্ধান্ত নিবেন?
ড. বিজন কুমার শীলের জন্ম বাংলাদেশে। ২০০২ সালে সিঙ্গাপুরের সিভিল সার্ভিসে যোগদানের সময় নিয়ম অনুযায়ী তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ছেড়ে দেন। একইসঙ্গে চাকরির নিয়ম অনুযায়ী সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। গত ১ জুলাইয়ে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে অবস্থান করছেন। সরকারের কাছে তার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মেয়াদ বাড়ানো আবেদন জমা দেওয়া আছে।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রচলিত নিয়ম অনুসারে ড. বিজনকে বিদেশি (অন্য দেশের পাসপোর্টধারী) হিসেবে ‘ই–ভিসা’ (এমপ্লয়মেন্ট ভিসা) করার উপদেশ দিয়েছে এবং তার পর্যটক ভিসার মেয়াদ এক বছর বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান পদে যোগ দেন। তিনি ‘অর্থ নিতে পারবেন না’ বলে ভিসায় উল্লেখ করার দিন থেকে বেতন-ভাতা নিচ্ছেন না। এর আগ পর্যন্ত তিনি অধ্যাপকের পদমর্যাদায় বেতন-ভাতা পাচ্ছিলেন।
বিদেশি নাগরিকদের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়ার সুপারিশ প্রদানকারী সংস্থা বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিডা) পরিচালক আরিফুল হক বলেন, ‘সবেতন বা বিনা বেতনে চাকরি নিষিদ্ধ’—কথাটি লেখা থাকা বা না থাকার মধ্যে পার্থক্য নেই। কারণ, পর্যটক ভিসাধারী কেউ চাকরি করতে পারেন না।
বিজন শীল বলেন, তিনি এ বিষয়ে সচেতন ছিলেন না। তবে সর্বশেষ ভিসায় নিষিদ্ধ বিষয়টি দেখামাত্র তিনি তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, এটা আসলে আমার একটা ভুল হয়েছে। আমি এ বিষয়ে সচেতন ছিলাম না যে ড. বিজন কুমার শীলের দ্বৈত নাগরিকত্ব নেই। পরে আমি জেনেছি, সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব পেতে হলে শুধু সেই দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করা যায়।
তিনি বলেন, মর্যাদা বিবেচনায় তাকে আমরা স্বপদেই বহাল রেখেছি। শুধু বেতন-ভাতা স্থগিত করেছি। বিডা থেকে বলা হয়েছে, তাকে নিয়োগে নতুন করে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। আমরা সেটা কালই দেব। এমন কৃতী বিজ্ঞানী আমরা আরও বেশি নিয়োগ দিতে আগ্রহী।
এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, কাগজপত্র ঠিক থাকলে তিনি ওয়ার্ক পারমিট (কাজের অনুমতি) পাবেন। তবে সেটা পেতে হলে পর্যটক ভিসাধারীর মর্যাদা তাকে বদলাতে হবে। সে জন্য তাকে ই–ভিসা পেতে সিঙ্গাপুরে ফিরতে হবে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাইলে এ নিয়ম শিথিল করে বিজন শীলের ভিসার ধরন বদলাতে পারে।