ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মেধাবী ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন আত্মহত্যা করেছেন বলে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আদালতে পৌঁছলে হত্যায় অভিযুক্ত দুজন জামিন পান। তবে সুমাইয়ার পরিবারের দাবি সুমাইয়া আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নাটোর জজ কোর্টের পিপি সিরাজুল ইসলাম জানান, সুমাইয়ার মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করে বুধবার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নাটোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ বিচারক আবদুর রহমান সরদারে আদালতে পেশ করা হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে কারাগারে আটক সুমাইয়ার স্বামী মোস্তাক হোসেন, তার শ্বশুর জাকির হোসেন ও তার শাশুড়ি সৈয়দা মালেকার জামিন আবেদনের শুনানি হয় ওই আদালতে।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের বিরোধিতার কারণে সুমাইয়ার স্বামী মোস্তাকের জামিন হয়নি। তবে মামলায় শ্বশুর-শাশুড়িকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
সুমাইয়ার মা নুজহাত সুলতানা ও সুমাইয়ার ভাই সালাহ উদ্দিন জানান, প্রভাব খাটিয়ে হত্যাকে আত্মহত্যার রিপোর্ট প্রদান করে অভিযুক্তদের জামিন করা হয়েছে। পাশাপাশি সুমাইয়ার ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে পুলিশ তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। সুমাইয়ার পিতা বেঁচে না থাকায় তার পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর করার কেউ নেই। তাই তারা শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
সুমাইয়ার শ্বশুর জাকির হোসেন ও তার শাশুড়ি সৈয়দা মালেক জামিন পেয়ে বুধবার কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার বড় হরিশপুর এলাকায় তাদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তারা কোথায় আছে এলাকাবাসী কেউ বলতে পারেনি।
অপরদিকে নাটোর সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, মেডিকেল টিমের মাধ্যমে সুমাইয়ার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। রিপোর্টে কি আছে তা আদালতে খোঁজ নিতে বলেন তিনি।
নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, মামলার তদন্ত শেষ না হওয়ায় এই বিষয়ে কোনো কিছু বলার সময় হয়নি।
২২ জুন সুমাইয়ার মরদেহ নাটোর সদর হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায় সুমাইয়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। এই ঘটনায় ওইদিন রাতেই সুমাইয়ার মা নুজহাত সুলতানা বাদী হয়ে সুমাইয়ার স্বামী মোস্তাক হোসেন, তার শ্বশুর জাকির হোসেন, তার শাশুড়ি সৈয়দা মালেক ও ননদ জাকিয়া ইয়াসমিনকে অভিযুক্ত করে সদর থানায় মামলা করেন। মামলার ৪ অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও পূর্বেই জামিন হয় জাকিয়া ইয়াসমিনের। আর গতকাল জামিন পান জাকির হোসেন ও সৈয়দা মালেক। বর্তমানে মোস্তাক রয়েছেন কারাগারে।