মানব দেহে চালানো তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় সফলতা পেয়েছে ব্রিটিশ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন, চ্যাডক্স। তবে কার্যকারিতার ক্ষেত্রে করোনার অন্যান্য টিকার চেয়েও এখনও পিছিয়ে আছে তা। যদিও দাম, সংরক্ষণ ব্যবস্থা ও উৎপাদন ক্ষমতার নিরিখে অক্সফোর্ডের এই টিকাকেই সবচেয়ে বাস্তব সম্মত বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈশ্বিক মহামারি রোধে, যে কয়টি টিকা সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে তার অন্যতম, অক্সফোর্ডের গবেষকদের তৈরি ব্রিটিশ ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকার চ্যাডক্স।
সম্প্রতি ফাইজার-বায়োএনটেক, মডার্না এবং স্পুটনিক-ফাইভ, তাদের তৃতীয় ট্রায়ালের ফলাফলে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা ৯০-৯৫ শতাংশ বলে দাবি করেছে। তবে, এর থেকে পিছিয়ে আছে বহুল আকাঙ্খিত চ্যাডক্স। অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলছে, ভ্যাকসিনটি গড়ে ৭০ শতাংশ কার্যকরি। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্নার সংরক্ষণ ব্যবস্থা বেশ জটিল। সে হিসাবে অক্সফোর্ডের গবেষকদের টিকাটিই সবচেয়ে বাস্তবসম্মত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনা বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ডেভিড নাবারো জানান, অন্য যেকোনটির চেয়ে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন বেশি আশা জুগিয়েছে। ফাইজার আর মডার্নার ভ্যাকসিন সংরক্ষণে কোল্ড চেইন বা শীতল ব্যবস্থা দরকার। অন্যদিকে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ফ্রিজের তাপমাত্রায় দীর্ঘদিন সংরক্ষণ সম্ভব। আর এর উৎপাদন হবে অনেক বেশি। তাই প্রাপ্তিও সহজ হবে।
প্যাসকাল সোরিয়টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেন, ফাইজার কিংবা মডার্নার সাথে আমাদের কোন প্রতিযোগিতা নেই। পুরো বিশ্বের চাহিদা মেটাতে বিপুল ভ্যাকসিন প্রয়োজন। তাই যত বেশি প্রতিষ্ঠান সফল হবে ততই করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয় সহজ হবে।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক বলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেল বিশ্ব। অক্সফোর্ডের টিকার নিরাপত্তা আর কার্যকারিতার চুড়ান্ত প্রমাণ পেলেই জরুরি ভিত্তিতে এর অনুমোদন দিবে যুক্তরাজ্য।
ফাইজার ও মডার্নার চেয়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দাম বেশ কম হবে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এটি যেকোন বয়সের জন্যই কার্যকর।
ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকার জরুরি অনুমোদন বিষয়ে আগামী ১০ ডিসেম্বর সিদ্ধান্ত জানাবে, যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন-এফডিএ। অনুমোদন পেলে ১১-১২ ডিসেম্বরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এই টিকা ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করছে, দেশটির প্রশাসন।