বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মারধরে নিহত দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীর স্মৃতি ও চেতনা সমুন্নত রাখতে রাজধানীর পলাশী চত্বরে ‘আট স্তম্ভ’ নির্মাণ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠনের কর্মীরা গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করেন।
সংগঠনটির আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী এই সৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেন।
গণমাধ্যম কে আখতার হোসেন বলেন, ‘আবরার ফাহাদ গত বছরের এই দিনে শহীদ হন। আমরা তাঁর স্মৃতি সমুন্নত রাখতেই এ উদ্যোগ নিয়েছি। আর যেন কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র নির্যাতন-নিপীড়ন না হয়, এ জন্যই এই স্তম্ভ।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ভারতবিরোধী স্লোগান দিতে দিতে পলাশী চত্বরে এসে জমায়েত হন। এ সময় তাঁরা ‘আবরারের খুনিরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘গোলামির চুক্তি, মানি না মানব না’, ‘দেশবিরোধী চুক্তি, মানি না মানব না’, ‘আমার নদী ফিরায় দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ফেনী নদী ফিরায় দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
একপর্যায়ে তাঁরা পলাশী মোড়ে বুয়েটের প্রবেশপথের ল্যাম্পপোস্টের পাদদেশ পরিষ্কার করতে থাকেন। একদিকে ট্রাকে করে সিমেন্ট, বালু ও ইট আনা হয়, অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা পাশের দোকান থেকে পানি নিয়ে আসেন। দেখতে দেখতেই কয়েকজন রাজমিস্ত্রি ও শিক্ষার্থীরা মিলে বালু-সিমেন্টের মিশ্রণে পানি দিয়ে কংক্রিট তৈরির মাধ্যমে শুরু করে দেন ‘আট স্তম্ভ’ নির্মাণের কাজ। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়।
পলাশীর মোড়ের সড়ক বিভাজনের ওপর আটটি স্তম্ভ ও একটি ফলক দিয়ে নির্মিত হয়েছে এটি। সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, গণপ্রতিরক্ষা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা, দেশীয় শিল্প-কৃষি ও নদী-বন-বন্দর রক্ষা, সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ও মানবিক মর্যাদা। এই আটটি শব্দমালা নিয়ে আটটি স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে।