লালমনিরহাটের পাটগ্রামে কোচবিহার মহারাজার আমলের প্রায় তিন শ বছরের পুরনো ভবনকে (কাচারিঘর) সংস্কার করে ভূমি গবেষণা জাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছে। কিছুদিন আগেও এটি পাটগ্রাম উপজেলার পৌর ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হতো।
জানা গেছে, কোচবিহার মহারাজার সময় থেকেই এই ভবনটি ভূমির খাজনা আদায়ে ব্যবহৃত হয়েছে।
২০১৯ সালেন ১ আগস্ট পাটগ্রাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপক কুমার দেব শর্মা ভবনটি সংস্কার করে ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্রমবিকাশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে ভূমি গবেষণা জাদুঘর হিসেবে বাস্তবায়ন করেন। এখানে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা বহু পুরনো নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে প্রাচীন আমলের জমির পরিমাপ, খাজনা আদায়, জমি বর্গাসহ বিভিন্ন বিষয়ের তথ্য। এতে বিভিন্ন সময়ে রাজাদের ব্যবহৃত জিনিসপত্রও সংরক্ষিত রয়েছে।
প্রাচীন নির্দশনের মধ্যে রয়েছে তৎকালীন রাজা-মহরাজাদের ব্যবহৃত ৩টি সিন্দুক, তরবারি, গান্টার চেইন (ভূমি পরিমাপ যন্ত্র) প্রভৃতি। এই জাদুঘরের মধ্যে প্রদর্শনের জন্য রয়েছে ভূমিসংক্রান্ত ফরম গ্যালারি ও ভূমি ব্যবস্থপনার ইতিহাস। এছাড়াও স্থাপন করা হয়েছে ভূমিবিষয়ক লাইব্রেরি। এর পাশে বাগানে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার ফুলের গাছ। দর্শনার্থী ও তৃণমুল পর্যায়ের ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাদের ভূমিবিষয়ক গ্রন্থ পড়ার জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এখানে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাদের ভূমিবিষয়ক বিভিন্ন মতামত গুরত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। ভূমিবিষয়ক আলোচনার কেন্দ্রস্থল হওয়ায় এই ভবনের নাম দেওয়া হয়েছে ভূমি গবেষণা জাদুঘর। প্রতিদিন ভূমি গবেষণা জাদুঘরের এসব উপকরণ দেখতে ভিড় করছে দর্শনার্থীরা।
এবিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপক কুমার দেব শর্মা বলেন, সেই রাজার আমল থেকে ভবনটি ব্যবহৃত হতো খাজনা আদায়ে। ভবনটি প্রায় তিন শ বছরের পুরনো। ভূমি ব্যবস্থপনা যে ১ হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করার জন্য জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ওই ইতিহাসের স্বাক্ষী হিসেবে প্রাচীন ভূমিসংক্রান্ত বিভিন্ন উপকরণ সংরক্ষণ করি। এর মাধ্যমে প্রাচীনকালের জমিসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবে নতুন প্রজন্ম।