অসাধু কারবারিদের থামাতে বাজার মনিটরিং ও জরিমানা করা হচ্ছে।
পেঁয়াজ আমদানির বিকল্প বাজার খুঁজতে এক মাস সময় চেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। যেখানেই কম দামে মানসম্পন্ন পেঁয়াজ মিলবে, সেখান থেকেই করা হবে আমদানি। নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়াচ্ছে উল্লেখ করে বাজার মনিটরিং চলছে বলেও জানান তিনি।
অতি পঁচনশীল হওয়ায় মোট উৎপাদনের প্রায় ২৫ ভাগ পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। সে হিসেবে এবার প্রকৃত উৎপাদন ছিল ১৯ লাখ ১১ হাজার মেট্রিক টন। আর বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২৫ লাখ মেট্রিক টন। জুলাই ও আগস্টে আমদানি করা হয় এক লাখ ৮৪ হাজার ৫৬২ মেট্রিক টন।
পেঁয়াজ আমদানির প্রধান উৎস ভারত হলেও, গত বছর দেশটিতে দাম বেড়ে যাওয়ার পর রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। দাম বেড়ে যায় বাংলাদেশেও। বিকল্প একাধিক দেশ থেকে তখন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়।
এবারও দাম বাড়ায় হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে ভারত। সে অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতিতে বুধবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বলা হয়, মৌসুমের আগ পর্যন্ত পেঁয়াজের মজুদ থাকতে হবে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। যেখানে দেশি পেঁয়াজ মজুদ আছে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন।
বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, আমাদের দেশীয় পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ এখনো আছে,এটি নিয়ে আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। দেশে বর্তমানে প্রায় পাঁচ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি হচ্ছে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, পেঁয়াজ আমদানির বিকল্প বাজার খুঁজছে সরকার। ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে ক্রয়কৃত পেঁয়াজ যেগুলো সীমান্ত পার হওয়ার অপেক্ষায় আছে, সেগুলো দু-একদিনের মধ্যে দেশে আসবে। তুরস্ক ও মিসর থেকে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে, অল্প কিছু দিনের মধ্যে এগুলোও দেশে পৌঁছবে। টিসিবি এবার বড় ধরনের পেঁয়াজের মজুত গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের আগেই আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে এগুলো ক্রয় করা হয়েছিল। আশা করা যাচ্ছে এক মাসের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে। ভোক্তারা পেঁয়াজ ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হলে কোনো সমস্যা হবে না।
এতকিছুর পরও কারসাজি, পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা। মন্ত্রী জানান, পেঁয়াজের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন বাজার মনিটরিং জোরদার করেছে। পেঁয়াজ রফতানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত বছরের মতো অন্যান্য দেশ থেকে এবারও প্রয়োজনীয় পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। পেঁয়াজ সরবরাহে কোনো ঘাটতি হবে না। পেঁয়াজ নিয়ে অস্থির হওয়ার কোনো কারণ নেই।
স্থলবন্দরগুলোতে ভারতের পেয়াঁজ আসার জটিলতা ২-১ দিনেই কেটে যাবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।