জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় পাত্রী চাই বিজ্ঞাপনে বিয়ে করে কানাডায় স্থায়ীকরণ বা ব্যবসার দায়িত্ব অপর্ণের সুবর্ণ সুযোগ। এ নিয়ে ১০ বছর ধরে প্রতারণা করেছে সাদিয়া জান্নাত ওরফে জান্নাতুল ফেরদৌস। আর এভাবেই প্রতারণার মাধ্যম ৩০ কোটিরও বেশি টাকা হাতিয়ে অনেককে সর্বস্বান্ত করেছেন এই প্রতারক।
দ্বিতীয় স্বামী এনামুল হাসানের নেতৃত্বে ‘পাত্র চাই’ বিজ্ঞাপন দিয়ে কয়েকজন পাত্রের কাছ থেকে একদিনেই ৪০ লাখের বেশি টাকা তুলেছেন সাদিয়া। তবে কেউ জানতো না কারো তথ্য। শতাধিক পাত্র তার শিকার হয়েছে। আর ভুক্তভোগীদের প্রতারণার অর্থের হিসাব ডায়েরিতে টুকে রাখত সাদিয়া।
রিমান্ডে থাকা সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে সাদিয়া প্রতারণার নানা কলাকৌশল জানিয়েছে। তবে প্রতারক চক্রের মূল হোতা সাদিয়ার স্বামীসহ আরো চার সদস্য এখনও পলাতক।
সাদিয়া জানায়, কখনও অবিবাহিত যুবক, কখনও বিপত্নীক, কখনও তালাকপ্রাপ্ত, কখনও নামাজি আবার কখনও বয়স্ক পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দিতো সাদিয়া। যে পাত্রের জন্য যেমন পাত্রী দরকার তেমন রূপেই নিজেকে উপস্থাপনের চেষ্টা করতো।
বিশেষ করে ধনাঢ্য পাত্রদের টার্গেট করে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দিয়েই বেশি প্রতারণা করতো। এভাবে গত প্রায় ১০ বছর ধরে শতাধিক পাত্রের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাদিয়া।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর রামপুরা এলাকা থেকে গ্রেফতারের পরদিন শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে সিআইডি।
সিআইডি জানায়, দুজন মিলে প্রতারণার উদ্দেশ্যেই কুমিল্লার দেবীদ্বারের বাসিন্দা এনামুল হাসানকে বিয়ে করে সাদিয়া। বিয়ের আগে তাদের দুজনের মধ্যে ফেসবুকে পরিচয় হয়। সেখানেই এই প্রতারণার কৌশল নিয়ে কথাবার্তা চলে। এরপর বিয়ের পর শুরু হয় প্রতারণার নতুন কলাকৌশল।
রিমান্ডে সাদিয়ার তথ্যানুযায়ী, দ্বিতীয় স্বামী এনামুল হাসানের ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে সাদিয়ার। তারা আত্মগোপন করেছে বলে সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সাদিয়ার প্রতারণা প্রসঙ্গে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইমের সিনিয়র সহকারী বিশেষ পুলিশ সুপার জিসান আহমেদ বলেন, প্রতারক সাদিয়া ও তার চক্রের মাধ্যমে শত শত মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। যাদের অনেকেই সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।