খাটের চার কোণে চার পায়ায় চারটি বড় পরী। আর পরীর হাতে বসে আছে প্রজাপ্রতি। দুই পাশের ঝলমে চারটি করে মোট আটটি ছোট্ট আকারের পরী। খাটজুড়ে বিভিন্ন নকশায় ও পরীর এমন স্থির নকশায় কেবলই শিল্প ফুটে উঠেছে। যে কারণে খাটটির নাম দেয়া হয়েছে ‘পরী পালং খাট’।
খাগড়াছড়ির গুইমারার স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মো. নুরুন্নবী বানিয়েছেন এই খাটটি। নিখুঁত দক্ষতায় তিন বছর দুই মাস সময়ে খাটটি নির্মাণ করেছেন আবু বক্কর ছিদ্দিক ওরফে কাঞ্চন মিস্ত্রি।
জানা গেছে, খাটটি তৈরির সময় কোনো নকশা বা ক্যাটালগ ছিল না মিস্ত্রির কাছে। মিস্ত্রি তার মনের আবেগ আর মাধুর্য মিশিয়ে নকশা তৈরি করেন। এটি তৈরি করতে কাঞ্চন মিস্ত্রি মজুরি হিসেবে সাড়ে নয় লাখ টাকা নিয়েছেন এবং খাটটি তৈরি করতে নুরুন্নবীর মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ টাকা।
সম্প্রতি নিখুঁত দক্ষতায় তৈরি এই ‘পরী পালং খাট’-এর ছবি সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় তা। আশপাশের এলাকায় খাটটির কথা ছড়িয়ে পড়লে সকল বয়সের মানুষ প্রতিদিনই এটি দেখার জন্য ভিড় করছেন কাঠ ব্যবসায়ী নুরন্নবীর বাড়ি।
জানা গেছে কাঞ্চন মিস্ত্রি মাত্র চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে সে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় একটি ফার্নিচার দোকানে কাজ শুরু করেন। চার বছর পর তিনি নিজেই মিস্ত্রি হয়ে যান এবং কাজ করতে থাকেন। ‘পরী পালং খাট’র বিষয়ে বলেন, খাটটি তৈরি করতে একশ ফুট কাঠ লেগেছে। মনের মাধুর্য মিশিয়ে খাটটি তৈরি করেছেন তিনি।
কাঠ ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা নুরন্নবী জানিয়েছেন, ব্যতিক্রম কিছু করার পরিকল্পনা থেকেই খাটটি তৈরি করিয়েছি। কাজ শুরুর পর তিন বছর সময় নিয়েছেন কাঞ্চন মিস্ত্রি। সময় বেশি লাগলেও দুর্দান্ত কাজ করেছেন সে এবং এতে একটি স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রকৃত সেগুন কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে খাটটি। এর দাম এক কোটি টাকা হাঁকিয়েছি আমি। তবে এরই মধ্যে একজন ৭০ লাখ টাকা দাম বলেছেন। এটি বিক্রির পর লাভের একটি অংশ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমার।