শারীরিক প্রতিবন্ধিতা জয় করে বাড়িতে বসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ করে স্বাবলম্বী হয়ে সাড়া জাগানো মাগুরার ‘বিস্ময়’ তরুণ ফাহিম-উল করিম (২২) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বুধবার রাত ১১টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
পারিবারিক সূত্র জানায়, বুধবার সকালে ফাহিম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
বিরল ডুচেনেমাসকিউলার ডিসট্রফি (ডিএমডি) রোগে ভুগছিলেন ফাহিম। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় শহরের মোল্যাপাড়া জামে মসজিদ ময়দানে তার জানাজা শেষে মাগুরা পৌর কবর স্থানে দাফন করা হয়।
ফাহিমের বাবা রেজাউল করিম বলেন, দেশের বাইরে নিয়ে ফাহিমকে উন্নত চিকিৎসার করাতে পারলে পুরোপুরি সুস্থ না হলেও শারীরিক অবস্থার কিছুটা হলেও ভালো হতো। তাকে বাঁচিয়ে রাখা যেত। কিন্তু অর্থের অভাবে তা করাতে পারিনি।
২২ বছর বয়সী ফাহিম ৮ম শ্রেণিতে পড়াবস্থায় বিরল এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গোটা শরীর অচল হয়ে যায়।
সচল শুধু মাথা ও ডান হাতের দুটি আঙুল। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে তিনি মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করে সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনেন।
পরিবার নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন ফাহিম। সংসারের সকল খরচ চালিয়েও সঞ্চিত টাকায় তিনি মাগুরা শহরের মোল্লা পাড়ায় জমি কিনে বাবা-মা’য়ের জন্য পাকা বাড়ি করেন সফল এই ফ্রিল্যান্সার।
তার কাজে খুশি হয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় এর পক্ষ থেকে ২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর মাগুরায় এসে ফাহিমকে একটি ল্যাপটপ উপহার দিয়েছিলেন।
কাজের দক্ষতার কারণে জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সার ফাহিম বিশ্বের ৩০ থেকে ৩৫টি দেশের কাজ করতেন। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে গত চার বছর ধরে ফাহিম মাসে গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে আয় করেছিলেন।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে নিজ পরিবার, সমাজ, দেশের জন্য বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত হওয়া ফ্রিল্যান্সার ফাহিমের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু, মাগুরা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শামীম খান।