বরগুনায় যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে হত্যার পর মুখে বিষ ঢেলে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার রাতে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক গৃহবধূকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত গৃহবধূ তানজিলা বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের বানাই এলাকার মো. জাহাঙ্গীরের স্ত্রী। তার বাবার বাড়ি সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের লবণগোলা গ্রামে।
জানা যায়, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে গৃহবধূকে নিয়ে আসেন তার স্বামী জাহাঙ্গীর ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
খবর পেয়ে উপস্থিত হন গৃহবধূর মা হাওয়া বেগম ও বাবা রাজা মিয়া।
তানজিলার বাবা রাজা মিয়া যুগান্তরকে বলেন, মেয়েকে যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই নির্যাতন করেছে জামাই জাহাঙ্গীর, তার মা ও বোন।
তিনি বলেন, এ ছাড়া চোখের নিচে কালো দাগ ও গলায় দাগ দেখা গেছে। আমার মেয়েকে মারপিট করে হত্যা করেছে। এরপর তানজিলার মুখে বিষ ঢেলে দেয় তারা। নিহতের মরদেহ শনিবার ময়নাতদন্ত করা হবে। এরপর আমি মামলা করবো।
এ বিষয়ে তানজিলার মা হাওয়া বেগম বলেন, আট বছর আগে তানজিলার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তানজিলা শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে স্বামীর বাড়িতে বসবাস করছিল। শ্বশুরবাড়িতে অবস্থানকালে যৌতুকের জন্য তানজিলাকে প্রায়ই মারধর করেছে।
এ কারণে শ্বশুরবাড়ির লোকদের সঙ্গে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত তানজিলার। আমার জামাই তানজিলার মৃত্যুর ঘটনাকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রমাণ করার জন্য তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল নিয়ে যায়।
এর পর দায়িত্বরত চিকিৎসক তানজিলাকে মৃত ঘোষণা করলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় তারা।
এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. মেহেদী হাসান বলেন, সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তানজিলাকে মৃত অবস্থায় কয়েকজন লোক বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। এ সময় তানজিলার মুখ থেকে ফেনা বের হচ্ছিল। তার সঙ্গে আসা স্বজনরা জানান, তানজিলা কীটনাশক পান করেছেন।
বরগুনা সদর থানার তদন্ত মো. শহিদুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। ঘটনাস্থলে আমি নিজেই গিয়েছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমরা লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।