বিখ্যাত মরমী সাধক হাসন রাজার ৯৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৬ ডিসেম্বর। ১৯২২ সালের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন হাসন রাজা।
হাসন রাজার গবেষণা-সাধনা ও শিল্পকর্ম ছিল গণ-কল্যাণমুখী। তিনি বিখ্যাত জমিদার ছিলেন। আবার সুরের সাধকও ছিলেন। তার চিন্তা চেতনায় আবহমান বাংলার কৃষ্টি শিল্প সংস্কৃতি ধারণ করে বাংলার গৌরবকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন।
করোনার কারণে মরমী এই সাধকের মৃত্যুবার্ষিকীতে এবার কোনো আয়োজন নেই।
১৮৫৪ সালের সালের ২১ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহরের লক্ষণশ্রীর ধনাঢ্য জমিদার পরিবারে জন্ম নেয়া মরমী সাধক হাসন রাজা তার জীবনে প্রায় দু’শ গান রচনা করেছেন।
‘একদিন তোর হইব রে মরণ রে হাসন রাজা’, ‘মাটির পিঞ্জিরার মাঝে বন্দি হইয়ারে কান্দে হাসন রাজা মন মনিয়া রে’, ‘প্রেমের বান্ধন বান্ধরে দিলের জিঞ্জির দিয়া’, ‘রঙের বাড়ই রঙের বাড়ই রে’, ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম রে’, ‘লোকে বলে ঘরবাড়ি ভালানা আমার’, ‘আগুন লাগাইয়া দিলও কুনে হাসন রাজার মনে,’ সহ জনপ্রিয় অসংখ্য গানের জনক হাসন রাজা।
হাসন রাজার গানে সহজ সরল স্বাভাবিক ভাষায় মানবতার চিরন্তন বাণী যেমন উচ্চারিত হয়েছিল, তেমনি আধ্যাত্মিক কবিও ছিলেন তিনি। সকল ধর্মের বিভেদ অতিক্রম করে তিনি গেয়েছেন মাটি ও মানুষের গান।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ১৯২৫ সালে কলকাতায় এবং ১৯৩৩ সালে লন্ডনের হিবার্ট বক্তৃতায় হাসন রাজার দুটি গানের প্রশংসা করেছিলেন।
শহরের তেঘরিয়ার জন্মভিটায় হাসন রাজা মিউজিয়ামকে একটি পূর্ণাঙ্গ মিউজিয়াম হিসেবে গড়ে তোলার দাবি পর্যটকসহ হাসনরাজা প্রেমীদের।
হাসন রাজা প্রেমী শফিউল মিয়া জাগো নিউজকে জানান, ভেবেছিলাম হাসন রাজা মিউজিয়ামে তার ব্যবহারকৃত পোশাক, হাতের লেখা কবিতাসহ অনেক জিনিস আছে। কিন্তু এখানে এসে দেখতে পেলাম হাসন রাজা মিউজিয়ামটা অনেক ছোট। সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই হাসন রাজা মিউজিয়াম যদি বড় পরিসরে হয় তাহলে এখানে এসে আমরা ও আগামী প্রজম্ম অনেক কিছু শিখতে পারবে।
সাংস্কৃতিক কর্মী আল হাবিব জাগো নিউজকে জানান, বাংলাদেশের অনেক প্রান্ত থেকে হাসন রাজার মিউজিয়াম দেখতে দর্শনার্থীরা আসেন, কিন্তু হাসন রাজার মিউজিয়ামটা ছোট হওয়ায় দর্শনার্থীদের অনেক সমস্যা হয়। তাই সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই তার মিউজিয়ামটা যাতে সরকারি খরচে বড় করে নির্মাণ করা হয়।
হাসন রাজার প্রপৌত্র সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জানালেন, হাসন রাজার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে হাসনরাজা মিউজিয়ামে নানা আয়োজন হয়। এবার করোনার কারণে এসব আয়োজন হচ্ছে না। কেবল মিলাদ মাহ্ফিল হবে। হাসন রাজা মিউজিয়ামকে একটি পূর্ণাঙ্গ মিউজিয়াম হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা রয়েছে, ওখানে কাজ হচ্ছে।