ads
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১৪ পূর্বাহ্ন

মসজিদে ছিলেন তিন ভাই, প্রাণ গেল দুজনের

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ১৩ বার পঠিত

পারুল আক্তার (৪০) মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আরবি পড়াতেন। এ থেকে আয় হওয়া অর্থ দিয়ে চালাতেন তিন ছেলের লেখাপড়ার খরচ। পারুলের তিন ছেলে গতকাল শুক্রবার গিয়েছিলেন মসজিদে নামাজ পড়তে। হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে পারুলের ছোট ছেলে ইয়াসিন (৯) বের হয়ে যায় মসজিদ থেকে।

পারুলের ছোট ছেলে বের হলেও বের হয়নি বড় ছেলে সাব্বির (২১) ও মেজ ছেলে জুবায়ের। মসজিদের ভেতরের আগুনের ঘটনায় দুই ছেলের শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। পরে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার মসজিদে বিস্ফোরণে দুই ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকাহত ইয়াসিন।

বড় দুই ভাইয়ের পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য খুব কাছ থেকেই দেখেছে ইয়াসিন। ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেলেও এখনো অচেতন হয়ে পড়ে আছে সে। ইয়াসিনের মা পারুল আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ চত্বরে বার্ন ইনস্টিটিউটে। বাবাও সেখানে। ইয়াসিন অন্যজনের বাড়িতে অচেতন হয়ে পড়ে আছে। পাশে বসে আছে স্থানীয় কয়েকজন।

প্রায় আধা ঘণ্টা ইয়াসিনের চোখেমুখে পানি ছিটানোর পর একবার চোখ মেলেছিল সে। চোখ মেলেই গোঙাতে গোঙাতে ইয়াসিন কী যেন বলে উঠল উচ্চ স্বরে। বোঝা যায়নি তার কথা। তারপরই আবার বলে উঠল, ‘আমার ভাই দুইডা কই? আমি কেন পুড়িনি? আমিও পুড়তে চাই। আমি বাঁচতে চাই না। আমার সামনেই পুড়ে গেল সবাই।’ এসব বলতে বলতে ফের অচেতন হয়ে পড়ে ইয়াসিন।

ইয়াসিনের এই চিৎকার ভারি করে তুলেছিল পুরো বাড়ির পরিবেশ। ওই বাড়ির মানুষ ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেছিল তখন। কাঁদতে কাঁদতে সেখানে থাকা মুসলিমা আক্তার নামের একজন বলে উঠলেন, ‘পারুল আপা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লোকের বাড়িতে বাড়িতে আরবি পড়ান। আরবি পড়িয়েই তিন ছেলের লেখাপড়া করান তিনি। আর আজ বড় দুই ছেলেই মারা গেল! কী নিয়ে থাকবে আপা? আর কিছুদিন পরেই তো ছেলেরা আয় করা শুরু করত। তখন হয়তো সুখ আসত আপার। আপার স্বামীও দেখে না তাদের। আরেকটা বিয়ে করেছে। এসব ভেবে ভীষণ খারাপ লাগছে।’

পারুলের বড় ছেলে সাব্বির নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের বিবিএ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। মেজ ছেলে জুবায়ের একই কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পশ্চিম তল্লা এলাকার বোমওয়ালা বাড়ির পাশের এক বাসার দ্বিতীয় তলার ভাড়া একটি কক্ষে তিন ছেলে নিয়ে থাকতেন পারুল আক্তার। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সাব্বির আর জুবায়েরের কলেজ ব্যাগ পড়ে আছে ঘরে। শুধু নেই তাঁরা দুই ভাই।

ওই বাড়ির মালিক মো. সুমন বলেন, ‘আমার বাসায় ভাড়া থাকেন পারুল আপা। সারা এলাকার মানুষের আরবি পড়ান আপা। এই এলাকারই বাসিন্দা তিনি। ছোটবেলা থেকেই তিন ছেলেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ান পারুল আপা।’

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

Prayer Time Table

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:২৮
  • ১২:১২
  • ১৫:৫৬
  • ১৭:৩৬
  • ১৮:৫৩
  • ৬:৪৩
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওয়ালি উল্লাহ
নির্বাহী সম্পাদক
নিউজ রুম :০২-৯০৩১৬৯৮
মোবাইল: 01727535354, 01758-353660
ই-মেইল: editor@sristybarta.com
© Copyright 2023 - SristyBarta.com
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102