জ্বালানি ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু জানিয়েছেন, তিতাস কর্তৃপক্ষের কারো কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শনিবার (০৫ সেপ্টম্বর) বিকেলে ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে করে মন্ত্রী জানান, গ্যাস সংযোগের ওপর দিয়ে মসজিদের বাইরের অংশ নির্মাণের কারণেই লিকেজ সৃষ্টি হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি তিতাস কর্তৃপক্ষের কারো কোনো অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, এ এলাকাটিতে রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণসহ অধিকাংশ বাড়িতেই অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নেয়া হয়েছে। তদন্ত করে এর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিতাস গ্যাস সংযোগের লিকেজ থেকেই নারায়ণগঞ্জে মসজিদে নামাজ চলাকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, লিকেজের বিষয়টি সমজিদ কমিটি আগে থেকে জানলেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। পাশাপাশি তিতাস কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও টাকা না দেয়ায় তারা মেরামত করেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার রাতে এশার নামাজ চলাকালে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে। এসময় মসজিদের ছয়টি এয়ারকন্ডিশন, অ্যাডজাস্ট ফ্যানগুলোসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ও জায়নামাজ পুড়ে যায়। অধিকাংশ সিলিং ফ্যান নষ্ট এবং দরজা জানালার সবগুলো কাঁচ ভেঙে টুকরো হয়ে মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে। এই বিস্ফোরণে মুসুল্লিদের মধ্যে গুরুতর দ্বগ্ধ অবস্থায় ৩৭জনকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে।
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২০ জনে। এ ঘটনায় শোকের পাশাপাশি আতঙ্ক বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মধ্যে।
তবে স্থানীয়রা বলেন, মসজিদটির নিচে তিতাস গ্যাস সংযোগে দীর্ঘদিন যাবত বেশ কয়েকটি লিকেজ থাকলেও সেগুলো মেরামত করা হয়নি। সেই লিকেজ থেকে নির্গত গ্যাস মসজিদের ভেতরে জমাট বেঁধে বিস্ফোরণ ঘটেছে। কেউ বলছেন, মসজিদ কমিটির নেতারা লিকেজের বিষয়টি আগে থেকেই জানতেন কিন্তু তারা আমলে নেননি।
আবার কারো কারো অভিযোগ, মসজিদ কমিটি তিতাস কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করায় নেতারা পিছ পা হন। উভয়পক্ষের গাফিলতির কারণেই এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
স্থানীয় সামাজিক সংগঠন আশার আলো কল্যাণ সংসদের সভাপতি ওয়াসিম ইকবাল এ বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স মহাপরিচালক সাজ্জাদ হোসেনও এমন ধারণার কথাই বলছেন।
এদিকে, এ ঘটনায় নাশকতার সন্দেহ পোষণ করে ঘটনাস্থল রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।