পাঁচ সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন শামীম হাসান। নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে তাকে হারিয়ে যেন ছেলে শাহিনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে।
শামীম হাসান নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন। বাবাকে হারিয়ে মা ও দুই বোনের দায়িত্ব এখন শাহিনের ওপর।
রবিবার সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে বাবার লাশ নিয়ে যাওয়ার সময় তাই মিডিয়ার সামনে পরিবারের প্রতি নিজের দায়িত্ব পালনের জন্য সহায়তা চাইলেন শাহিন।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবা নারায়ণগঞ্জ ডিসি অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন। তার উপার্জনেই চলতো আমাদের পাঁচ সদস্যের পরিবার। পরিবারের হাল ধরার জন্য কিছুদিন আগে সেখানে আমার চাকরির জন্যও একটি আবেদন করেছিলেন বাবা।’
‘আমার বাবাতো চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। এখন আমার পরিবারের কী হবে! তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আমার আবেদন- আমার আবেদনটা যেন তারা গ্রহণ করে, যাতে আমি পরিবারটা চালাতে পারি’ যোগ করেন শাহিন।
বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে আমার বাবাকে দেখে চেনা যায় না এমনভাবে পুড়েছিল। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। গ্যাস লিক করার কথা সবাই জানতো, তিতাসকেও জানানো হয়েছিল। তারা যদি তখন একটা ব্যবস্থা নিতো তাহলে আজ আমাকে বাবা হারাতে হতো না।’
এদিকে নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও দুই শিশু রয়েছে। দগ্ধ বাকি ১৩ জনের অবস্থাও সংকটাপন্ন।
শুক্রবার রাতে এশার নামাজের সময় তল্লায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ৪০ জনের বেশি মুসল্লি দগ্ধ হন। দগ্ধদের মধ্যে ৩৭ জনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে। জানালার কাচ উড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
মসজিদের নিচ দিয়ে যাওয়া তিতাস গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে এ বিস্ফোরণ হতে পারে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস। বিষয়টি তদন্তে জেলা প্রশাসন ও তিতাস কর্তৃপক্ষ কয়েকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।