মাদারীপুরে একাধিক মানবপাচার মামলার আসামি ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ মাতুব্বরকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা।
রোববার (১৬ মার্চ) রাতে রাজধানীর ঢাকার শাহবাগ থানাধীন সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামি ফরহাদ মাতুব্বর মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর এলাকার মৃত হামিজ উদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে এবং গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে ডাসার ও কালকিনি থানায় তিনটি মানবপাচারের মামলা রয়েছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্প থেকে পাঠানোর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গোপলপুর এলাকার মনির হোসেন (২৪) নামে এক যুবককে ইতালির ভিসা দিয়ে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখায় অভিযুক্ত আসামি ফরহাদ মাতুব্বর। প্রলোভনে পরে ওই যুবকের পরিবার দালাল ফরহাদকে প্রায় ১৭ লাখ টাকা দেয়। চুক্তি অনুযায়ী আসামি ওই যুবককে গত বছরের ১৩ মার্চ বাড়ি থেকে ইতালির উদ্দেশে ঢাকায় নিয়ে আসেন। তার তিনদিন পরই তাকে সরাসরি ইতালি না পাঠিয়ে দুবাই হয়ে লিবিয়া পাঠায়।
পরে ওই যুবককে লিবিয়ার একটি বন্দিশালায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালায় দালাল চক্র। এরপরে ওই যুবকের পরিবারের কাছে নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে তার মুক্তিপণের জন্য আরও কয়েক লাখ টাকা দাবি করা হয়। লিবিয়াতে নির্যাতনের শিকার ওই যুবকের বাবা ইউনুছ খন্দকার তার ছেলের সন্ধান চেয়ে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি কালকিনি থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ইউপি চেয়ারম্যান ফরহাদ মাতুব্বরকে।
পরে র্যাব-৮ ক্যাম্পের সদস্যরা বিষয়টি আমলে নিয়ে গোয়েন্দা অনুসন্ধান শুরু করে। সবশেষ ১৬ মার্চ র্যাবের সদস্যরা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জানতে পারে প্রধান আসামি ফরহাদ ঢাকায় অবস্থান করছে। পরে র্যাব-৩ ও র্যাব-৮ এর যৌথ অভিযানে ইউপি সদস্য ফরহাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। সোমবার আসামিকে ডিএমপি’র শাহজাহানপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে জানায় র্যাব।
র্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মীর মনির হোসেন বলেন, ‘মামলার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি যৌথ আভিযানিক দল মানবপাচারে জড়িত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা চলমান রয়েছে। গ্রেপ্তার আসামি ডাসার ও কালকিনি উপজেলা থেকে বহু যুবককে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের লিবিয়া আটকে রেখে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায় করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি তার অপরাধ স্বীকার করেছেন। তার এই চক্রে আরও যেসব আসামি রয়েছে, তাদের ধরতেও র্যাবের গোয়েন্দা অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। ’