সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে পারাবত ১১ লঞ্চের কেবিনের যাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস লাবনীর হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশন (পিবিআই)।
গ্রেপ্তারকৃত মনিরুজ্জামান চৌধুরী (৩৪) গাজীপুরের কাবাসিয়া এলাকার আব্দুস শহীদের ছেলে, তবে সে ঢাকার মীরপুর-১ এর দারুস সালাম প্রিন্সিপাল আবুল কালাম রোডের সরকারি কোয়াটার এলাকায় বসবাস করতেন। তাকে ওখান থেকেই বরিশাল জেলা পিবিআই গেল রাতে গ্রেপ্তার করে। আজ (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০ টায় বরিশালে পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির।
পুলিশ সুপার জানান, পিবিআই তদন্তের প্রথমভাগেই অজ্ঞাত ওই নারীর পরিচয় জানতে পারে। জান্নাতুল ফেরদৌস লাবনী নামে ওই নারীর গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার আদমপুর এলাকায়। যদিও সে ঢাকার মিরপুরের পল্লবীতে বসবাস করতেন। লঞ্চের সিসি টিভির ফুটেজ দেখে সনাক্ত করা ওই নারীর সাথে লঞ্চে আগমন করা ব্যাক্তির সন্ধানে নামে পিবিআই। এক পর্যায়ে সনাক্ত হওয়া ব্যাক্তিকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির সাথে লঞ্চের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ছবি মিলিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অপরদিকে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে লাবনীর ব্যবহৃত ওড়না, মোবাইলসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি মনিরুজ্জামানকে লঞ্চে যে শার্টটি পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে সেটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী জানায়, তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। লঞ্চযোগে রাতে বরিশাল যাবার পথে কেবিনে তাদের ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে ওড়না দিয়ে পেচিয়ে লাবনীকে হত্যা করা করে মনিরুজ্জামান। লঞ্চেটি বরিশালে পৌঁছলে মনিরুজ্জামান কৌশলে পালিয়ে বাসযোগে ঢাকা চলে যায়।
পুলিশ আরো জানায়, এটি তার ৩য় বিবাহ। আর নিহত লাবনীরও আগে বিয়ে হয়েছিলো। তবে এই দুই জনের মধ্যকার আসল সম্পর্ক উদঘাটনে আরো সময় লাগবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল সদর নৌ থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ ঘটনায় নৌ পুলিশ বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। গ্রেপ্তার মনিরুজ্জামানকে তাদের হেফাজতে নেয়া হচ্ছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তদন্তের স্বার্থে রিমান্ডের আবেদনও করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
এর আগে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে ঢাকা থেকে বরিশাল নদী বন্দরে আসা পারাবত ১১ লঞ্চের ৩৯১ নম্বর সিঙ্গেল কেবিন থেকে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
লঞ্চের কেবিনবয় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কাজে ওই কেবিনে গেলে অজ্ঞাত নারীর মৃতদেহ খাটের ওপর পরে থাকতে দেখতে দেখেন। তাৎক্ষনিক নৌ পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।
তারা মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। সুরতহাল ও অন্যান্য আলামতের ভিত্তিতে বিষয়টি হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া পরে তদন্তে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট।