পদ্মা নদীর প্রবল স্রোতে তীররক্ষা বাঁধের তলদেশ থেকে জিওব্যাগ ও সিসি ব্লক সরে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে অনেক পরিবার। অনেকে আবার বসতবাড়ি সরিয়ে নিয়ে রাস্তায় বা নৌকায় দিন কাটাচ্ছেন। ভাঙন নিয়ন্ত্রণে জিওব্যাগ ডাম্পিং কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই থেকে পদ্মা, মেঘনা, কীর্তিনাশা নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়। এই পর্যন্ত জাজিরা অংশের পদ্মা সেতু সংলগ্ন নাওডোবা অংশে, চরআত্রা ও সুরেশ্বর এলাকায় পদ্মা নদীতে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে। তাই ১৩টি প্যাকেজের মাধ্যমে ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ডাম্পিং চলছে। অন্যান্য নদীতেও ভাঙন দেখা গেলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে চরআত্রা ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত এলাকায় পদ্মার ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের আওতায় ভাঙনরোধে কাজ চলছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ঐতিহাসিক সুরেশ্বর দরবার শরীফ রক্ষা বাঁধের প্রায় ৬০ মিটার পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দরবার শরীফ ও আশেপাশের বসতবাড়ি নতুন করে ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে। ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ডাম্পিং চলছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ ও ২০১২ সালে সুরেশ্বর দরবার শরীফ ও আশেপাশে ভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩টি প্যাকেজে ২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙন রোধে ৮৫০ মিটার স্থায়ী রক্ষাবাঁধ নির্মাণ করে। চলতি বর্ষা মৌসুমে সেই বাঁধের ২টি পয়েন্টে ৬০ মিটার ভেঙে পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
পদ্মার তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারীরা জানায়, ইতিমধ্যে তারা প্রায় ৪ থেকে ৫ বার পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়েছে। ৮ বছর আগে এই বাঁধটি নির্মাণ হওয়ায় স্বস্তি পায় তারা। এবার আবার বাঁধে ভাঙন ধরেছে। ভয়ে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিয়েছে অনেক পরিবার।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবিব বলেন, পদ্মা নদীসহ মেঘনা ও কীর্তিনাশা নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন কবলিত সকল স্থানেই ভাঙনরোধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। পদ্মা নদীর ৩টি স্থানে ভাঙন দেখা দিলে ১৩টি প্যাকেজের মাধ্যমে কাজ শুরু করি। এখন সুরেশ্বর দরবার শরীফ রক্ষা বাঁধের ভাঙন কবলিত এলাকায় জিওব্যাগ ডাম্পিং চলছে। পদ্মার পানি কমলে ভাঙনের প্রবনতা বাড়তে পারে। আমরা প্রস্তুত আছি, যখন যেখানে ভাঙন শুরু হবে, সেখানেই ভাঙনরোধে কাজ শুরু করব।