কুমিল্লার দেবিদ্বারে মাদরাসা শিক্ষক এবং নারী-শিশুকে রড দিয়ে পেটানোর ঘটনায় সেই চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের ইউপি-১ অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে বরখাস্ত করা হয়। জাহাঙ্গীর আলম দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউপির চেয়ারম্যান।
জানা গেছে, পারিবারিক কলহের কারণে ৯ এপ্রিল সকালে মাদরাসা শিক্ষক আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী আমেনা আক্তার। এ ঘটনায় একই দিন দুপুরে গ্রাম পুলিশ আব্দুল মতিনকে দিয়ে মাদরাসা শিক্ষককে নিজ বাড়িতে ডাকেন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর। পরে মেয়ে ও চাচাতো ভাই আব্দুস ছামাদকে সঙ্গে নিয়ে চেয়ারম্যানের বাড়ি যান তিনি। ওই বাড়িতে যাওয়ার পর কোনো কথা না শুনেই রড দিয়ে তাকে পেটানো শুরু করেন চেয়ারম্যান। পরে আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ১৬ এপ্রিল দেবিদ্বার থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক।
এদিকে, ৩ এপ্রিল একই ইউপির উখাড়ী গ্রামের ওয়ালি উল্লাহর স্ত্রী কাজল বেগম ও তার শিশু ছেলে শরীফকে মিথ্যা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পিটিয়ে আহত করেন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর। এ ঘটনায় ১৯ এপ্রিল চেয়ারম্যান ছাড়াও তার ভাতিজা শামীমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন আহত কাজল বেগম।
দুইটি মামলার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। ১২ আগস্ট দেবিদ্বারের ইউএনও রাকিব হাসান স্বাক্ষরিত এক পত্রে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন মোতাবেক চার্জশিটভুক্ত ওই চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করার প্রস্তাবনা সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ধারা ৩৪(১) অনুযায়ী ওই চেয়ারম্যানকে স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে আমি ন্যায় বিচার পেতে যাচ্ছি। আশা করি তিনি চূড়ান্ত বরখাস্ত হবেন। আমি মাদরাসা শিক্ষক, আমার কোনো বক্তব্য না শুনেই ওই দিন সবার সামনে নিষ্ঠুরভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছিলেন চেয়ারম্যান।