সাভারের পশ্চিম ব্যাংকটাউন এলাকায় অপহরণের চার দিন পর রংপুর থেকে আমেনা আক্তার নামের আড়াই বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে এক দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা হলেন আশরাফুল ইসলাম ও তাঁর স্ত্রী শামছুন নাহার।
শিশু আমেনা আক্তার পশ্চিম ব্যাংকটাউন এলাকার আসাদুল হকের মেয়ে। আটক দম্পতি আশরাফুল ও শামছুন নাহার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার শোলাগাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তবে তাঁরা সাভারের ব্যাংকটাউন এলাকায় থাকতেন।
পুলিশ বলছে, সাভারের পশ্চিম ব্যাংকটাউন এলাকায় একটি কক্ষে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকেন আসাদুল হক। এর মধ্যে গত সোমবার তাঁদের প্রতিবেশী দম্পতি আশরাফুল ইসলাম ও শামছুন নাহার শিশু আমেনা আক্তারকে দোকান থেকে চকলেট কিনে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যান। পরে ওই দম্পতি শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে মুঠোফোনে বিকাশের মাধ্যমে মুক্তিপণ হিসেবে এক লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে শিশুটিকে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকিও দেন তাঁরা। পরে শিশুটির বাবা বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদের কাছে পাঁচ হাজার টাকা পাঠান।
এ সময় অপহরণকারীরা শিশুটিকে মারধরের পর কান্নার আওয়াজ মুঠোফোনে ধারণ করে এবং ইমোর মাধ্যমে তাঁর মা-বাবার কাছে পাঠায়।
পরে শিশুটির বাবা সাভার মডেল থানায় অপহরণের একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করতে মাঠে নামে। বিষয়টি বুঝতে পেরে গতকাল শুক্রবার বিকেলে শিশুটিকে রংপুরের কোতোয়ালি থানা এলাকায় একটি রাস্তার মধ্যে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। এ সময় অপহরণকারীরা শিশুটির হাতে তার বাবার মোবাইল নম্বর লিখে দেয়। এর মধ্যেই শিশুটিকে উদ্ধার করতে চার দিন ধরে রংপুরে অবস্থান নেয় সাভার মডেল থানা পুলিশের একটি দল। অপহরণকারীরা বারবার স্থান পরিবর্তন করায় শিশুটিকে উদ্ধার করতে পুলিশের বেগ পেতে হয়।
পরে গতকাল বিকেলে ওই শিশুকে রংপুরের কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল রাতেই অপহরণকারী দম্পতি শামছুন নাহার ও তাঁর স্বামী আশরাফুল ইসলামকে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার একটি বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
পরে শিশু আমেনা আক্তারকে আজ ভোরে সাভার মডেল থানায় এনে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
এ বিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, অপহরণকারী ওই দম্পতির বিরুদ্ধে আজ সকালে সাভার মডেল থানায় মামলা করে দুপুরে আদালতে পাঠানো হবে।
ওসি আরো জানান, ওই দম্পতি বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে শিশুদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করতেন বলে জানা গেছে।