তিন সন্তানের ভরণ-পোষণের আশ্বাসে হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুম আক্তারের বদলে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে জেল খাটছেন বিধবা মিনু আক্তার। ২০১৮ সালের জুন থেকে এখন পর্যন্ত জেলে আছেন তিনি।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি কুলসুমা সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছেন, যা বিচারাধীন।
সন্তানদের ভরণ-পোষণের আশ্বাসে অন্যের বদলে মিনুর সাজা খাটার বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য গত মঙ্গলবার মামলার নথিপত্র উচ্চ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভুঁঞা।
মিনু আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা বলেন, সন্তানদের ভরণ-পোষণের আশ্বাসে কুলসুমা আক্তারের বদলে মিনু আক্তার জেলখাটলেও তার সন্তানদের ঠিকমতো খাবার দেওয়া হচ্ছে না।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরীর রহমতগঞ্জে ২০০৬ সালের ৯ জুলাই মোবাইল নিয়ে বাকবিতণ্ডের জেরে পোশাক শ্রমিক কোহিনুর বেগম খুন হন। ওই হত্যার দায়ে কুলসুমাকে যাবজ্জীবন সাজাসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। এই ঘটনায় ২০১৭ সালে গ্রেপ্তার হোন কুলসুমা আক্তার। দেড় বছর জেল খাটেন কুলসুমা। ২০১৮ সালের জুন থেকে কুলসুমার পরিবর্তে মিনু আক্তারকে কারাগারে রাখা হয়।
মিনু আক্তারের স্বামী বাবুল ঠেলাগাড়ি চালাতেন। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। এরপর থেকে সন্তানদের খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে পরে মিনু। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে ইয়াছিন (১০), গোলাপ (৭) সীতাকুণ্ডের একটি এতিমখানায় থাকেন এবং মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস (৫) স্থানীয় এক ব্যক্তি লালন-পালন করছেন।
মিনুর ভাই রুবেল হোসেন জানান, সন্তানদের ভরণ-পোষণের আশ্বাসে মিনু কারাগারে থাকার রাজি হলেও তার সন্তানদের কোনো খোঁজখবর নেননি কুলসুমা আক্তার। কুলসুমা আক্তার মিনুকে বলেন কয়েক মাসের মধ্যেই জেল থেকে মুক্তি করে নিবেন। কিন্তু দেখতে দেখতে প্রায় ৩ বছর ধরে জেলে রয়েছেন আমার বোন। এখনও জামিন করা হয়নি।