সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারণাকারী একটি চক্রের হোতা সৈয়দ আরিফ হাসান রনিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্যজন হলেন আরিফের সহযোগী সাইফুল ইসলাম।
সিআইডি বলছে, এই চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেকার যুবক-যুবতীদের টার্গেট করে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে চাকরির প্রলোভন দেখাত। তারা পদ অনুযায়ী চার থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে।
চাকরিপ্রার্থীরা ভুয়া নিয়োগপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন। গ্রেপ্তার সাইফুলের কয়েক নিকটাত্মীয় সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চপদে চাকরি করেন। তাদের নাম করেই তারা চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করছিল।
এখন পর্যন্ত ২০ ভুক্তভোগীর বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মেট্রো-উত্তর) খালিদুল হক হাওলাদার বলেন, এই চক্রের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন এমন অনেক ভুক্তভোগীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনও প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছে। প্রতারক চক্রের আরও কয়েক সদস্যের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, গ্রেপ্তার আরিফের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাসা থেকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুয়া নিয়োগপত্র পাওয়া গেছে।
এমনকি চাকরিপ্রার্থীদের যোগদানপত্র, বেতন বিল অনুমোদনপত্র, অগ্রিম বেতন বিলের অনুমোদন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশ ও বদলির আদেশসহ ৭টি বিভিন্ন সিলমোহর উদ্ধার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফার্মগেটের সাগর সৈকত মার্কেটের সাইফুল ইসলামের এসএম কম্পিউটার অ্যান্ড সার্ভিসে অভিযান চালানো হয়।
সেখানে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার স্বাক্ষর স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগপত্রসহ অন্যান্য নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজ প্রস্তুত করা হতো। অভিযানে ওই প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার মনিটর, পিসি, স্ক্যানার ও প্রিন্টার জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার তেজগাঁও থানায় মামলা হয়েছে।