ads
শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২৩ অপরাহ্ন

সিনহা হত্যা: নানা প্রশ্নের জট খুলছে

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২০
  • ১৪ বার পঠিত

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ নিহতের ঘটনায় অনেক প্রশ্নের জট খুলতে শুরু করেছে। ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভের চেকপোস্টে কী ঘটেছিল তা বেরিয়ে আসছে। পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

কক্সবাজারের আদালতে গতকাল সোমবার ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন নন্দ দুলাল; আগের দিন দিয়েছিলেন লিয়াকত। সিনহা হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি লিয়াকত আলী। এখন পর্যন্ত এ মামলায় ৫ জন আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে দুই নম্বর আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এখনও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।

গতকাল তাকে চতুর্থ দফায় এক দিনের রিমান্ডে নিয়েছে মামলার তদন্ত সংস্থা র‌্যাব। সূত্র জানায়, লিয়াকত স্বীকার করেছেন- তার গুলিতেই সিনহা মারা যান। যখন গুলি করা হয় তখন সিনহার হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না। সিনহা অস্ত্র তাকও করেননি। একই ধরনের তথ্য স্থানীয় গ্রামবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা সংশ্নিষ্টদের দিয়েছেন।

মামলা তদন্তের অগ্রগতির ব্যাপারে জানতে চাইলে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ সোমবার রাতে বলেন, এ মামলার উল্লেখযোগ্য ও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। যেসব প্রশ্ন উঠেছিল তার সুরাহা সাক্ষীদের বক্তব্য ও অন্যান্য তথ্য-প্রমাণের মধ্যে রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্ত কর্মকর্তা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাসময়ে চার্জশিট দেওয়া সম্ভব হবে। সূত্র আরও জানায়, লিয়াকত বলেছেন- মারিশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিন, নাজিম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আইয়াস ঘটনার দিন লিয়াকতকে একাধিকবার ফোন করেন।

তারা তাকে জানান, সেনাবাহিনীর পোশাক পরা ওই ব্যক্তি ডাকাত দলের সদস্য। তার হাতে অস্ত্র রয়েছে। ওই তিনজন লিয়াকতকে এটা বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করেন- ওই ব্যক্তি (সিনহা) ডাকাত দলের সদস্য। তাদের কথা বিশ্বাস করেন লিয়াকত। এরপর ডাকাত ধরতে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ি থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে তিনি চেকপোস্টে যান। তার সঙ্গে ছিলেন এসআই নন্দ দুলাল।

অন্য একটি সূত্র জানায়, পাহাড়ে একটি ‘ভিডিও পার্টি’ (সিনহার টিম) কোনো কাজে আসা-যাওয়া করছে এটা জানা ছিল লিয়াকত ও টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের। ঘটনার কয়েক দিন আগে স্থানীয়দের কাছে লিয়াকত এবং ওসি খোঁজ নিয়েছিলেন ‘ভিডিও পার্টি’ পাহাড়ে কী করছে। পাহাড়ে তাদের কাজের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছিল। স্থানীয় গ্রামবাসী এ ধরনের তথ্য সংশ্নিষ্টদের জানিয়েছিলেন। সিনহার নামটি ঘটনার আগে অভিযুক্ত কারও কারও জানা ছিল। এর সঙ্গে পূর্বপরিকল্পনার যোগসূত্র মিলিয়ে দেখতে আরও অনেক তথ্য-উপাত্ত যাচাই করা হচ্ছে।

তৃতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল সকাল ১০টায় কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে হাজির করা হয় নন্দ দুলালকে। বিচারকের খাস কামরায় প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। জবানবন্দি শেষে বিকেল সাড়ে ৪টায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় জেলা কারাগারে। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে নেওয়া হয় আদালতে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি খাইরুল ইসলাম বলেন, নন্দ দুলালের জবানবন্দি এই মামলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। র‌্যাবের কাছে তিনি ইতোমধ্যে অনেক তথ্য দিয়েছেন। তার বক্তব্যে উঠে এসেছে মেজর সিনহা হত্যার সঙ্গে লিয়াকত ও প্রদীপের সংশ্নিষ্টতা কতটুকু রয়েছে।

আরও এক দিনের রিমান্ডে প্রদীপ : ওসি প্রদীপকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চতুর্থ দফায় আরও এক দিনের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল দুপুর ১টার দিকে তাকে আদালতে নিয়ে আসে র‌্যাব। অধিকতর তদন্তের স্বার্থে তাকে আরও এক দিনের জন্য রিমান্ডের আবদেন জানান তদন্ত কর্মকর্তা। এই সময়ে প্রদীপের আইনজীবীরা রিমান্ডের বিরোধিতা করেন। জেলে প্রেরণ করে তাকে ডিভিশন দেওয়ার আবেদনও জানানো হয়। আদালত তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন আমলে নিয়ে প্রদীপকে আরও এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে বাদীপক্ষের আইনজীবী গোলাম মোস্তফা বলেন, ওসি প্রদীপ চতুরতার সঙ্গে সত্য গোপন করছেন। এগুলো আমরা দেখছি। তাই তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার জন্য আরও এক দিনের রিমান্ড প্রয়োজন।

আসামি প্রদীপের আইনজীবী আহসানুল হক হেনা রিমান্ডের বিরোধিতা করে বলেন, ওসি প্রদীপ আজ পর্যন্ত তাদের হেফাজতে রয়েছেন। ১৫ দিনের বেশি রিমান্ড দেওয়ার নিয়ম নেই। অথচ ২৫ দিনের পরও আজকে আবার রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। প্রদীপকে জেলে পাঠিয়ে ডিভিশন দেওয়ার আবেদন জানান আইনজীবী। উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত প্রদীপের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালতের আদেশ পেয়ে গতকাল বিকেলেই হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে প্রদীপকে হেফাজতে নিয়ে যায় র‌্যাব। ওসি প্রদীপের এটি চতুর্থ দফা রিমান্ড।

আরও ৭ দিন সময় পেল তদন্ত কমিটি : সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য আরও সাত দিন সময় পেয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, তদন্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। কিন্তু মামলার অন্যতম আসামি প্রদীপ কুমার দাশের জবানবন্দি না নেওয়ায় ৩১ আগস্টের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, প্রদীপ এখন র‌্যাবের হেফাজতে। রিমান্ডে রয়েছেন এই আসামি। এই রিমান্ড শেষ হবে ১ সেপ্টেম্বর। এ বিষয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছি। আরও সাত দিন সময় চেয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে।

ওসি প্রদীপসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা : ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে আরও একটি হত্যা মামলা হয়েছে। কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. হেলাল উদ্দীনের আদালতে মামলাটি করেন টেকনাফের রঙ্গিখালীর বাসিন্দা সুলতানা রাবিয়া মুন্নী।

মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী দিদারুল মোস্তফা জানিয়েছেন, আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে এ ঘটনায় অন্য কোনো মামলা হয়েছে কিনা, তদন্ত রিপোর্ট হয়েছে কিনা, তা জানাতে টেকনাফ থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলায় অভিযুক্ত ৪১ জনের মধ্যে ৩৫ জন পুলিশ সদস্য। মামলার এজাহারে বাদীর অভিযোগ, গত ৬ মে রাত ২টার দিকে তার স্বামী সৈয়দ আলম, ভাই নুরুল আলম ও নিকটাত্মীয় সৈয়দ হোছন ওরফে আব্দুল মোনাফকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে ওসি প্রদীপ ও এসআই মশিউর তাদের পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ওই টাকা না পেয়ে তাদের হত্যা করা হয়।

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

Prayer Time Table

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:২৮
  • ১২:১২
  • ১৫:৫৬
  • ১৭:৩৬
  • ১৮:৫৩
  • ৬:৪৩
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওয়ালি উল্লাহ
নির্বাহী সম্পাদক
নিউজ রুম :০২-৯০৩১৬৯৮
মোবাইল: 01727535354, 01758-353660
ই-মেইল: editor@sristybarta.com
© Copyright 2023 - SristyBarta.com
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102