সিলেট নগরীর নয়াসড়কে গণধোলাই দিয়ে ছাত্রলীগের দুই নেতাকর্মীকে অস্ত্রসহ পুলিশে দিয়েছে এলাকাবাসী। নগরীর বেসরকারি হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিরোধের জের ধরে তারা হামলা করতে এসেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার বিকেলে এই ঘটনার পর পুলিশ তাদের আটক করে চিকিৎসার জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তারা হলেন- সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক অদিত ইসলাম সালমান ও ছাত্রলীগ কর্মী রেদওয়ান।
কোতোয়ালী থানার ওসি মো. সেলিম মিঞা জানান, নগরীর মীরবক্সটুলায় বেসরকারি মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া নিয়ে ফেসবুকে বাকবিতণ্ডায় জড়ান কিছু যুবক। এই বিবাদের জেরে নগরীর উপকন্ঠ খাদিমপাড়া থেকে দুই যুবক নয়াসড়কে এসে যাদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিবাদ হয়েছে; তাদের খোঁজ করতে থাকেন। এ অবস্থায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে স্থানীয়রা তাদের আটক করে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সিলেটে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য সরকারি তিনটি হাসপাতাল নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে, যার মধ্যে বর্তমানে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নগরীতে পরিস্থিতির অবনতি হলে বেসরকারি হাসপাতালের সহযোগিতার প্রয়োজন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। এমন পরিস্থিতিতে মাউন্ড এডোরা হাসপাতাল নগরীর মীরবক্সটুলার শাখা এবং নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা সুবিধা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। ইতিমধ্যে তারা জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অবহিত করেছে।
এ অবস্থায় মাউন্ট এডোরার মীরবক্সটুলার শাখায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার বিরোধিতা করে এলাকাবাসীর পক্ষে সিভিল সার্জনকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় নয়াসড়ক জামে মসজিদের মোতাওয়াল্লী আব্দুল মালিক রাজা, স্থানীয় আজাদী সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি আব্দুল কাহির ও ব্যবসায়ী মিলাদ আহমদের নেতৃত্বে ৮৬ জন স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেন। তাদের মধ্যে আব্দুল মালিক রাজা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত বুধবার দেওয়া স্মারকলিপির অনুলিপি জেলা প্রশাসক, মেয়র ও হাসপাতালের পরিচালককেও দেওয়া হয়েছে।
নগরীতে করোনা চিকিৎসা ব্যবস্থার অপ্রতুলতার মধ্যে এমন স্মারকলিপি দেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। শুক্রবার বিকেলের ঘটনা সেই বিরোধের জের বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা। তিনি জানিয়েছেন, আটককৃতদের কাছ থেকে একটি খেলনা রিভলবার ও একটি রামদা জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।