নরসিংদীতে আবাসিক হোটেলে রেশমী আক্তারকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন তার স্বামী মো. রিপন। রোববার (২৩ আগস্ট) বিকেলে নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মণীষা রায়ের আদালতে ১৬৪ ধারায় এই জবানবন্দি দেন তিনি। এর আগে দুপুরে হত্যাকাণ্ডের এ ঘটনায় রিপনকে আসামি করে মামলা করেন রেশমীর ছোট বোন সালমা বেগম।
শনিবার বেলা ১টার দিকে শহরের বাজিরমোড় এলাকার আল মামুন আবাসিক হোটেল থেকে রেশমীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই দিন বেলা ১১টার দিকে স্বামী রিপনের ফোন পেয়ে তিনি ওই হোটেলে যান। হত্যাকাণ্ডের পরই ঘটনাস্থল থেকে রিপনকে আটক করে পুলিশ। রিপন (৪৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার লহরি এলাকার ছেলে। ১৮ বছর সৌদি আরবে থাকার পর গত বছর দেশে ফেরেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, শনিবার সকাল ১০টার দিকে রিপন নবীনগর থেকে এসে স্ত্রীকে ফোন করে শহরের আল মামুন আবাসিক হোটেলে যেতে বলেন। স্বামীর কথামতো তিনি দুপুর ১২টার দিকে সেখানে গেলে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করেন রিপন। এক হোটেল বয় কক্ষের দরজার নিচ দিয়ে রক্ত বের হতে দেখে কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে হোটেল কর্তৃপক্ষ নরসিংদী মডেল থানায় খবর দিলে রেশমীকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের ক্ষত ছিল। হাসপাতালে নেয়ার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।
সালমা বেগম জানান, রেশমী-রিপন দম্পতির দুই ছেলে। দীর্ঘ ১৮ বছর সৌদি আরব থাকার পর এক বছর আগে রিপন দেশে ফেরেন। ৯ বছর আগে প্রবাসে থাকা অবস্থায় রিপন গোপনে ফোনের মাধ্যমে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আরেকটি বিয়ে করেন। তিনি আগের বিয়ের বিষয়টি গোপন করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী বিষয়টি জানার পর ছয় মাস আগে রিপনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে নারী নির্যাতনের মামলা করেন। এসব কারণে রেশমীর সঙ্গে রিপনের দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো ছিল না। তাই দুই ছেলেকে নিয়ে রেশমী দুই বছর ধরে নরসিংদী শহরের বিলাসদী মহল্লার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে লঞ্চে করে নরসিংদী এসে রিপন রেশমীকে ফোন করে দেখা করতে বলেন। ওই আবাসিক হোটেলে যাওয়ার পরই এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।