ads
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১৬ পূর্বাহ্ন

১১ বছরে পা দিল সেই মণি-মুক্তা

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০
  • ১৫ বার পঠিত

আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নয়নের ছোঁয়া এবং বাংলাদেশের চিকিৎসক এআর খানের সাফল্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রাকে সম্ভাবনাময় করেছে।

তার সাফল্যকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে প্রথম অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশুর সফল পৃথকীকরণ করা হয়। এই সাফল্যের ইতিহাস বীরগঞ্জের জোড়া লাগানো জমজ দুই বোন মণি-মুক্তা। সেই ইতিহাস ১০ বছর আগের।

বাবা-মায়ের কোলে নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে বেড়ে উঠা মণি-মুক্তা এখন ১১ বছরে পা দিয়েছে। তারা এখন স্থানীয় পালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী।

শনিবার নিজ বাড়িতে পালন করা হবে মণি-মুক্তার জন্ম দিন। প্রতি বছর বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মণি-মুক্তার বন্ধুবান্ধবসহ প্রতিবেশী এবং গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে কেক কেটে জন্মবার্ষিকী পালন করা হলেও এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘরোয়া পরিবেশে জন্মদিন পালন করা হবে বলে জানান মণি-মুক্তার বাবা জয়প্রকাশ পাল।

তিনি জানান, মণি-মুক্তা সুস্থ এবং ভালো আছে। তারা একে অপরের সঙ্গে খেলা করে সময় কাটায়। বেশ সুন্দর করে কথা বলে। নিয়মিত স্কুলে যায় বলে জানিয়েছেন তাদের বাবা-মা।

জন্মদিনে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে মণি-মুক্তা জানায়, আমরা চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই। দেশবাসীর দোয়া এবং সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের শরৎ চন্দ্র পালের পুত্র জয়প্রকাশ পাল। জয়প্রকাশ পালের স্ত্রী কৃষ্ণা রানী পালের গর্ভে ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে সিজারিয়ান সেকশনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মণি এবং মুক্তা জোড়া লাগা অবস্থায় জন্ম নেয়।

পরে রংপুরের চিকিৎসকগণ ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যমজ বোনকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পৃথক করার পরামর্শ দেন। তাদের পরামর্শক্রমে ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে মণি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়।

অতঃপর ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অপারেশনের মাধ্যমে মণি-মুক্তা ভিন্ন সত্তা লাভ করে। বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।

মণি-মুক্তার বাবা জয়প্রকাশ পাল জানান, সে সময় গ্রামের মানুষ এটাকে অভিশপ্ত জীবনের ফসল বলে প্রচার করতে থাকে। সমাজের নানা কুসংস্কারে প্রায় একঘরে হয়ে পড়ি। সমাজের নানা অপবাদে গ্রামে আসিনি অনেক দিন। হতাশার মাঝে স্বপ্ন দেখি মণি-মুক্তাকে নিয়ে।

বিভিন্ন চিকিৎসকের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকি তাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য। আমাদের স্বপ্ন বাস্তব হয় ডা. এআর খানের কারণে। সেই মানুষটির কারণে আমাদের এই দুই সন্তানের নতুন করে বেঁচে থাকা।

মণি-মুক্তার মা কৃষ্ণা রানী পাল জানান, ২০০৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে প্রথমে ২১ ফ্রেরুয়ারি পার্বতীপুরে বাবার বাড়িতে আসি। কিছুদিন সেখানে থাকার পর নিজগ্রাম বীরগঞ্জ উপজেলার পালপাড়ায় মণি-মুক্তাকে নিয়ে আসি।

সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদে এবং ডা. এআর খানের সাফল্যে আমরা মণি-মুক্তাকে স্বাভাবিকভাবে ফিরে পেয়েছি। আমরা সব কষ্ট ভুলে তাদের চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। মণি-মুক্তা এবং পরিবারের জন্য সবার দোয়া কামনা করেছেন তিনি।

মণি-মুক্তার একমাত্র বড় ভাই সজল কুমার পাল জেলার খানসামা কলেজে বাংলা বিভাগে অনার্স শেষবর্ষে লেখাপড়া করছেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা জয়প্রকাশ পাল।

পালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধনঞ্জয় পাল ও সহকারী শিক্ষিকা শিউলি আকতার জানান, মণি-মুক্তা এখন ৫ম শ্রেণিতে পড়ছে। তারা লেখাপড়ায় বেশ ভালো। সহপাঠীরা তাদের খুব ভালোবাসে। মণি শান্ত হলেও মুক্তা বেশ চটপটে বলে তারা জানান। লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে নাচ শিখছে তারা। উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে যমজ দুই বোন।

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

Prayer Time Table

  • ফজর
  • যোহর
  • আছর
  • মাগরিব
  • এশা
  • সূর্যোদয়
  • ৫:২৮
  • ১২:১২
  • ১৫:৫৬
  • ১৭:৩৬
  • ১৮:৫৩
  • ৬:৪৩
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওয়ালি উল্লাহ
নির্বাহী সম্পাদক
নিউজ রুম :০২-৯০৩১৬৯৮
মোবাইল: 01727535354, 01758-353660
ই-মেইল: editor@sristybarta.com
© Copyright 2023 - SristyBarta.com
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102