অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার অপরাধে সিলেটের কানাইঘাট থানার মামলায় জামিন পেলেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তবে জামিন পেলেও মুক্ত হতে পারেননি তিনি।
রাজধানী ঢাকায় তার বিরুদ্ধে দায়ের মামলায় মানিককে শোন অ্যারেস্ট (গ্রেফতার) দেখানো হয়েছে। সেজন্য সিলেটের কারাগার থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হবে তাকে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে সিলেটের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন মানিক। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাশ এক টাকা জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে তাকে জামিন দেন। তবে তার বিরুদ্ধে ঢাকায় বিভিন্ন অপরাধে সহায়তার জন্য একাধিক মামলা রয়েছে। সেসব মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে মানিককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
সিলেট আদালতে নিযুক্ত পুলিশ পরিদর্শক (কোর্ট পরিদর্শক) জমসেদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সকালে শামসুদ্দিন মানিককে সেনা, পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পাহারায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে আদালতে হাজির করা হয়।
তার বিরুদ্ধে রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে সিলেটের কানাইঘাট থানা পুলিশ বাদী হয়ে পাসপোর্ট ও ভিসা ব্যতীত ভারতে প্রবেশের চেষ্টার অপরাধে মামলা করে।
গত ২৩ আগস্ট রাত ১১টার দিকে কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
পরদিন শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে তাকে কানাইঘাট থানায় হস্তান্তর করা হলে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে সিলেটের আদালতে হাজির করা হয়। পরে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগীর হোসাইন তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওইদিন আদালত প্রাঙ্গণে পুলিশি নিরাপত্তা ভেদ করে ক্ষুব্ধ জনতা বিচারপতি মানিককে বেধড়ক কিল-ঘুষি, লাথি মারেন এবং ডিম ও জুতা নিক্ষেপ করেন। আঘাতে তার অন্ডকোষ ফেটে যায়।
পরে অবস্থার অবনতি হলে ২৪ আগস্ট রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করে জরুরি ভিত্তিতে তার দেহে অস্ত্রোপচারের পর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রাখা হয়। এরপর অবস্থার উন্নতি হলে ২৮ আগস্ট আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানাস্তর করা হয় মানিককে।
শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ১২ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
কারা সূত্র জানায়, ঢাকার আদাবর থানায় পোশাকশ্রমিক হত্যার ঘটনায় করা মামলায় শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে শুনানির দিন গত ৩ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছিলেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। সেদিন তাকে আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মেডিক্যাল বোর্ড মানিককে ছাড়পত্র দেয়নি। তবে এখন সেই মামলায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হবে।