বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির জন্য সরকারের কাছে আবার আবেদন করেছে তার পরিবার। শারীরিক অসুস্থতায় সুচিকিৎসার জন্য স্থায়ী মুক্তি পেতে গত মঙ্গলবার দুপুরে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে হস্তান্তর করা হয়। খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষে আবেদনপত্রে তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার স্বাক্ষর করেন। আবেদনে খালেদা জিয়ার সহোদর হিসেবে শামীম এস্কান্দার নিজেকে উল্লেখ করেন।
বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র মারফত জানা গেছে, আবেদনে সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি দলীয় চেয়ারপারসন যেন বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারেন সে ব্যাপারে সরকারের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরিবারের লোকজন আশা করে, সরকার তাদের আবেদন মঞ্জুর করবেন।
বিএনপির ওই সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পরিবারের লোকজন তাকে চিকিৎসা দিতে পারেননি। বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে সরকারের দেওয়া শর্ত তারা বাতিল চান।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, যেহেতু ছয় মাস মেয়াদ শেষ হচ্ছে তাই তা বাড়ানোর জন্য খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এরপর আরও কিছু ধাপ রয়েছে। সেগুলো শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। তারপর সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গণমাধ্যমে আবেদনের এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে তাকে মুক্তি দেয় সরকার। যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী সেপ্টেম্বরে। এর আগেই সরকারের কাছে স্থায়ী মুক্তির জন্য আবেদন করে খালেদা জিয়ার পরিবার। ওই সময় বিদেশে চিকিৎসার জন্য মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি আইনমন্ত্রীর কাছেও চিঠি দেয় বেগম জিয়ার পরিবার। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করেন খালেদা জিয়ার ভাইবোনসহ পরিবারের সদস্যরা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আবেদনে বলা হয়েছে, করোনাকালীন দুর্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়নি। পাশাপাশি তার সুচিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য শারীরিক অসুস্থতায় কোনো পরীক্ষাও করা সম্ভব হয়নি। আবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের কারণে স্থবির হয়ে যাওয়া অফিস-আদালতসহ গণপরিবহন ও ব্যবসাবাণিজ্য প্রায় স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসতে শুরু করেছে। এতে অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা এবং এ সংক্রান্ত শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আবেদনে তার বয়স, শারীরিক অসুস্থতা ও মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তির জন্য আবেদন করা হলো।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।