ads
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০৯:২৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের ওপর জলকামান-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নবীন কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের স্বৈরাচারের দোসর আরও ৩৯ আমলার দ্রুত অপসারণ দাবি জুলাই ঐক্যের ধর্ষণের পর গর্ভপাত: সালিশে ব্যর্থ, মামলাও নেয়নি পুলিশ হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের ব্যয় দিনে ২০০ মিলিয়ন ডলার ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা বিপজ্জনক নজির: জাতিসংঘে চীনা দূত বেদখল খাসজমি উদ্ধারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ ভূমি উপদেষ্টার বান্দরবানের লামায় সেনাবাহিনীর অভিযান, ৯ সন্ত্রাসী আটক দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর মৃত্যু শ্রীবরদীতে মাছের ঘেরে ২ শিশুর মরদেহ, দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড!

অবহেলা ও স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হওয়ায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৪ আগস্ট, ২০২০
  • ২৯ বার পঠিত

প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকা। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বোঝার উপায় নেই দেশে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ এখন কোন পর্যায়ে। শুরুতে অদৃশ্য এ সংক্রমণ ঠেকাতে অন্য দেশের মতো বাংলাদেশে লকডাউন, সাধারণ ছুটি, জনচলাচলে সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। কিন্তু জীবিকার তাগিদে ও অর্থনৈতিক অচলাবস্থাকে গতিশীল করতে সরকার ধাপে ধাপে জনজীবনকে স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবকিছু করতে হবে।

কিন্তু স্বাস্থ্য সুরক্ষার বালাই নেই কোথাও। শুরুতে করোনা নিয়ে জনমনে যে আতঙ্ক ছিল তা এখন নেই বললেই চলে। স্বাভাবিক হয়ে এসেছে জীবনযাপন। স্বাস্থ্য সুরক্ষার অংশ হিসেবে ন্যূনতম মাস্কও ব্যবহার করতে চাচ্ছেন না অনেকে। সামাজিক দূরত্ব মানারও বালাই নেই। সার্বিক জীবনযাত্রার চিত্র দেখলে করোনার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি দেশে আছে বলে মনেই হয় না। মানুষের মধ্যে কোনো ধরনের ভয়ভীতি নেই। এভাবে স্বাস্থ্যবিধিকে অবহেলা ও ঢিলেঢালা জীবনযাপনে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। গতকাল রোববার ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, করোনা সংক্রমণের দিক দিয়ে এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয় আর বিশ্বে ১৬তম। এছাড়া নতুন রোগী শনাক্তের পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ৬-এ। আর করোনা সক্রিয় রোগীর তালিকায় অবস্থান ৯।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরেই সংক্রমণ ও আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু একটানা চলছে। অনেক বেশি ওপরেও উঠছে না আবার নিচেও নামছে না। সংক্রমণ একেবারে নিয়ন্ত্রণে আনতে যেসব কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে সেগুলো শতভাগ সফল হচ্ছে না। দেশে করোনার সার্বিক চিত্র পাওয়া গেলে সংক্রমণ কোথায় রয়েছে সেটা কিছুটা হলেও বলা যেত। আর এ কারণেই দেশে করোনা পরিস্থিতি কোন অবস্থায় রয়েছে সেটা বলা যাচ্ছে না। ফলে দেশে করোনা নিয়ে একটা গোলকধাঁধা পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

বাংলাদেশে করোনার চিত্রকে ‘পিকিউলিয়ার’ বলে মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন দেশের গ্রাফ পর্যালোচনা করে দেখছি বাংলাদেশের সঙ্গে ইরানের কিছুটা মিল রয়েছে। তবে কোনো কোনো দেশে সংক্রমণের সংখ্যা অনেক ওপরে উঠছে, আমাদের দেশে সেটা হচ্ছে না। কিন্তু আবার অনেক দেশ যে সংক্রমণ কমে আনছে সেটাও হচ্ছে না।

চীন করোনা মোকাবিলায় শতভাগ সফল একটি দেশ মন্তব্য করে অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, আবার ইউরোপের দেশগুলোতে প্রথম দিকে নাস্তানাবুদ হয়েছে তাদের মৃত্যুহারও বেশি। কিন্তু তারাও একসময় সেটা নিয়ন্ত্রণে করতে পেরেছিল। যদিও তাদের সেকেন্ড ওয়েব শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা একটা গোলকধাঁধার মধ্যে আছি। তীব্রগতিতে রোগীর ঊর্ধ্বগতি সেটাও না। কিন্তু এটা কোন দিকে যাবে, কোন দিকে মোড় নেবে, সেটা ভাবনার বিষয়। কারণ এখন যে ঢেউ চলছে তার ওপর আরেকটা ঢেউ এসে গেল, যাকে সুপার ইম্পোজড বলা হয়, সে রকম হতে পারে।

সেটা কবে নাগাদ হবে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটার নিশ্চয়তা নেই।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘যদি আমরা সবকিছুর চিত্র পেতাম, সবকিছু নিয়ে সার্ভে হতো তাহলে কিছুটা হলেও বলা যেত। সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত কোন পর্যায়ে রয়েছে করোনা বা কী হতে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ড নেই বললেই চলে দেশে। তাই কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, পরিকল্পনা ছিল যখন মহামারির চতুর্থ স্তরে যাবে, কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হবে তখন সোস্যাল ডিসটেন্সিং করা হবে। কিন্তু দ্বিতীয় পর্যায়ে সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পিকের জন্য আমরা অপেক্ষা করছিলাম। মহামারির অবস্থা বোঝার জন্য সারা দেশে যে পরীক্ষা করা হচ্ছে, আমি মনে করি তা যথেষ্ট। ইন্টারভেন্ট করার কারণে পিক বোঝা যায়নি, কিন্তু কেস বাড়ছে। সেভাবে পিক না হলেও সংক্রমণ ওঠানামা করেছে, আর সেটা একটা রেঞ্জের মধ্যেই। একইসঙ্গে মাইল্ড কেস ডিটেকশনের মধ্যে আসছে না, অধিকাংশ তারা বাসাতে আছে, পরীক্ষা করাচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে ঢিলেঢালা ভাব দেখানো ঠিক হবে না। যেসব দেশ ঢিলেঢালা ভাব দেখিয়েছে, তাদের খেসারত দিতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বিপজ্জনক ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। আর প্রথম করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ১৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পরবর্তী ১০০ জন শনাক্ত হয় ৬ এপ্রিল, ১ হাজার ১৪ এপ্রিল, ১০ হাজার ৩ মে, ২৫ হাজার ১৮ মে, ৫০ হাজার ১ জুন, ৭৫ হাজার শনাক্ত হয় ১১ জুন। করোনা শনাক্তের পর ১০৩ দিনে ১৮ জুন ১ লাখ ছাড়ায় শনাক্তের সংখ্যা। এর ঠিক এক মাস পর ১৮ জুলাই শনাক্তের সংখ্যা ২ লাখ ছাড়ায়।

ডা. মুশতাক বলেন, জুনে রোগী বেশি ছিল। জুলাইতে নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ, মানুষের আস্থাহীনতা, কিট সংকট, পরীক্ষা করাতে নানা ভোগান্তির কারণে রোগীর সংখ্যা নেমে গেল। আগস্ট মাসের শুরুর দিকে হাসপাতালে রোগী সংখ্যা কমে গেলেও এখন আবার বাড়ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও কোভিড ১৯-বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ধারণা করা হয়েছিল ঈদে চলাচলের শিথিলতা, পশুর হাটের কারণে সংক্রমণের হার অনেক বাড়বে। কিন্তু সেটা বাড়ছে না। যার ঈদের ইফেক্ট বোঝা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে ২৫ মে থেকে সংক্রমণের হার ২০ শতাংশের ওপরে উঠেছে। সেটা কিছুটা ওঠানামা করছে। যদিও এটা ফ্ল্যাট কিন্তু এটাই পিক।

তিনি বলেন, এখন কমানোটা কঠিন হবে। কারণ গণপরিবহনে যত সিট তত যাত্রী নিয়ে চলছে, দোকান খোলা, অফিস চলছে আগের মতো, স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিন বন্ধ হয়েছে, করোনা এমনিতেই চলে যাবে বলে মন্তব্য এসেছে নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে। এসব কারণে মানুষ আর এখন করোনাকে ভয় পায় না। এছাড়া মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না, মাস্ক পরছে না। তাতে করে করোনা কমবে না, এমনই থাকবে।

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওয়ালি উল্লাহ
নির্বাহী সম্পাদক
নিউজ রুম :০২-৯০৩১৬৯৮
মোবাইল: 01727535354, 01758-353660
ই-মেইল: editor@sristybarta.com
© Copyright 2023 - SristyBarta.com
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102