চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ডের উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টারত অভিবাসীদের নৌকাগুলিকে ব্রিটিশ জলসীমা থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা বাদ দেয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের আনা বিতর্কিত এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথা ছিল এনজিও ও অভিবাসন সংস্থাগুলোর।
অবশেষে পিছু হটলেন প্রীতি প্যাটেল৷ ইংলিশ চ্যানেলে অনিয়মিত উপায়ে আসা অভিবাসী নৌকাগুলোকে ফেরত পাঠানোর জন্য উপকূলরক্ষীদের অনুমতি দিতে সর্বাগ্রে চেষ্টা করেছিলেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ নতুন এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ছিল অভিবাসী নৌকাগুলোকে আটক করে পরে ফরাসি জলসীমার দিকে ঠেলে দেয়া৷
২৬ এপ্রিল ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, “বিতর্কিত এই পদক্ষেপটি শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে না৷’’ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৩ মে আদালতে যাওয়ার কথা ছিল এনজিও ও অভিবাসন সংস্থাগুলোর৷
সিভিল সার্ভেন্টস ইউনিয়ন-পিসিএস (পাবলিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল সার্ভিস ইউনিয়ন), অ্যাসোসিয়েশন কেয়ার ফর কালে, চ্যানেল রেসকিউ অ্যান্ড ফ্রিডম ফ্রম টর্চারসহ বিভিন্ন সংগঠন একযোগ হয়ে প্রীতি প্যাটেলের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা হাতে নেন৷
We are proud and relieved that the Government has withdrawn its controversial Pushbacks policy just over a week before our case was due to be heard in the High Court. 🧵.
— Care4Calais (@Care4Calais) April 25, 2022
সংস্থাগুলোর মতে, অভিবাসী নৌকাগুলোকে ফিরিয়ে দেয়ার এখতেয়ার ও আইনি ক্ষমতা ব্রিটিশ বর্ডার ফোর্সের নেই৷ এই ধরনের পদক্ষেপ স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আশ্রয়প্রার্থীদের নিরাপত্তার জন্য তা অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে৷
পিসিএসের সাধারণ সম্পাদক মার্ক সার্ওটকা বলেছেন, “আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য নৈতিকভাবে নিন্দনীয় এবং সম্পূর্ণ অমানবিক এই প্রস্তাবকে প্রতিরোধ করতে পেরে আমি গর্বিত। এতে করে অনেক আশ্রয়প্রার্থীর জীবন রক্ষা হবে।’’
ফরাসি কর্তৃপক্ষও যুক্তরাজ্যের এই পুশব্যাক কৌশলের কঠোর সমালোচনা করেছিল৷ ব্রিটিশ কর্তৃক্ষের হুমকির প্রতিক্রিয়ায় ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরা দারমানা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে টুইটারে বলেছিলেন, “ফ্রান্স সমুদ্রের আইনের পরিপন্থী কোনও আচরণ মেনে নিবে না৷”
এছাড়া তিনি ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলকে সম্বোধন করে দেয়া এক চিঠিতে বলেছিলেন, “এই ধরনের পদ্ধতি আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইনের পরিপন্থী হবে এবং চ্যানেল পার হতে চাওয়া অভিবাসীদের অস্থায়ী নৌকাগুলির নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকির কারণ হবে৷ প্যারিস সবসময় সমুদ্রে থাকা অভিবাসীদের জীবনকে সুরক্ষা, স্থিতি এবং অভিবাসন নীতির চেয়ে অগ্রাধিকার দেয়৷’’
La France n’acceptera aucune pratique contraire au droit de la mer, ni aucun chantage financier. L’engagement de la Grande Bretagne doit être tenu. Je l’ai dit clairement à mon homologue @pritipatel (1/2)
— Gérald DARMANIN (@GDarmanin) September 9, 2021
অপরদিকে, লন্ডন সবসময় যুক্তি দিয়ে আসছে তারা পাচারকারীদের নিরুৎসাহিত করতে এই পদক্ষেপ নিতে চায়৷ প্রীতি প্যাটেল বলেছিলেন এই পদক্ষেপের জন্য দরকার হলে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইনের ব্যাখ্যা পুনঃনির্ধারণ করা হবে৷