বিয়ের পোশাকে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের আবর্জনা পরিষ্কার করতে নামলেন নব দম্পতি। এমন ঘটনা নিয়ে জানালেন, ভাল কাজের সাথে সব সময় জড়িত থাকতেই তাদের এমন উদ্যোগ।
স্ত্রী জান্নাতুল বাকেয়া মিলির সাথে তারেক আজিজের এমন অভিযানের ভিডিও ধারণ করেছেন অনেকেই। এমন ব্যতিক্রমি কাজ নিয়ে তারেক আজিজের বক্তব্যটি এমন-
“দীর্ঘ ৫ বছর ধরে প্রেম। আমি তারেক আজিজ, বয়স: ২৮ বছর। পেশায় একজন স্বেচ্ছাসেবক। পড়াশুনা করি মাষ্টার্সে সামাজিকবিজ্ঞান নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাছাড়া একজন তরুণ ব্যবসায়ীও বটে আমি।
আমার স্ত্রী জান্নাতুল বাকেয়া মিলি, বয়স ২০ বছর, পেশা ছাত্রী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (বাক্ষণবাড়িয়া সরকারি কলেজ) থেকে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। দুই পরিবারের সম্মতিতেই আমাদের বিয়ে হয়। দুজনই সমাজকর্মী হিসেবে ছোট থেকেই বিভিন্ন সমাজসেবামূলক সংগঠনের সাথে জড়িত। বিয়ের আগেই ভাবতাম বিয়ের পরের জীবনটাকে নিয়ে। কি করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সময়গুলো অতিক্রম করবো। এই ছোট পৃথিবীটাতে এমন কিছু কাজ করে যেতে চাই যাতে এই সমাজ আমাদের মনে রাখে। ভাল কাজের সাথে সব সময় জড়িত থাকতে চাই। ৩ অগাষ্ট আমাদের বিয়ে হয়। বিয়ের রাত্রে দুজন সিদ্ধান্ত নিলাম বিয়ের পরদিন দুজন মিলে বিমানে চড়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে যাবো। যদিও আমার আগেও বিমান ভ্রমণ এর সুযোগ হয়েছিল। কিন্তু আমার প্রিয়তম স্ত্রীর জন্য নতুন ছিল বিমান ভ্রমণ। তাই দুজন একসাথে বিমান চড়াতে খুবই এক্সাইটেড ছিলাম। কক্সাবাজার গেলাম, সাথে করে আমাদের বিয়ের পোশাকগুলোও নিয়ে গিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য জীবনটাকে ভাল কাজে নিয়োজিত করে রাখা। সৈকতে দেখলাম অনেক ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। তার ফাঁকে একটি মৃত কচ্ছপকেও দেখতে পেয়েছি। ঐগুলো দেখে খুবই খারাপ লাগছিল।
দুজন মিলে সিন্ধান্ত নিলাম সৈকত পরিষ্কারে নামবো। দুজন বিয়ের সাজে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে নেমে পড়লাম। হাতে হ্যান্ডগ্লাবস পড়ে সামনে যা ময়লা-আবর্জনা পেয়েছি তা পলিথিনের বড় বস্তায় ভরতে থাকলাম। আশপাশের শত-শত মানুষ আমাদের ভিডিও করছিল। কারণ আমাদের পরিষ্কার অভিযানের সময় পোশাকগুলো ছিল বিয়ের পোশাক। পরিষ্কার অভিযানটি আমাদের খুবই আনন্দ দিচ্ছিল।
CLEAN WORLD, GREEN WORLD নামে একটি লিফলেট নিয়ে আমারা কয়েকটি ছবিও উঠিয়েছিলাম। আমাদের উদ্দেশ্য শুধু একটাই, এই পৃথিবীটাতো আমাদেরই। আমরা যদি চাই, তাহলেই পৃথিবীটা পরিষ্কার থাকে।”