সোমবার মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে চাকা পাংচার হওয়ায় দাঁড়িয়ে থাকা মালবাহী একটি কাভার্ডভ্যানের চালক ও সহযোগীকে মারধর করে ৫ হাজার টাকা ও গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেন রেজওয়ান সিদ্দিকি কাব্য ও আল আমিন হোসেন নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ ছাত্রলীগ কর্মী।
অভিযুক্ত কাব্যের বিরুদ্ধে ইভটিজিং, ক্যাম্পাসে মাদক সেবন ও সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের জেরে মঙ্গলবার নিরাপত্তাকর্মী ও ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের খোঁজে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে থাকেন কাব্য ও তার সহযোগীরা। একপর্যায়ে কাব্য সাংবাদিকদের কার্যালয়ে এসে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন।
এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত হলে তাদের সামনেও বিভিন্নভাবে হুমকি দিতে থাকে। পরে প্রক্টরিয়াল বডির উপস্থিতিতে ইবি থানা পুলিশ তাকে অস্ত্রসহ আটক করে।
অভিযুক্ত কাব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শাহজালাল সোহাগের অনুসারী। তিনি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার ঘোষগাটি গ্রামের ইয়াকুব হোসেনের ছেলে। ঘটনায় মাহবুব (ফোকলোর ২০২০-২১) ও আসাদ (অর্থনীতি ২০১৮-১৯) নামের তার দুই সহযোগী সঙ্গে ছিলেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় বুধবার তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে ও ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া বিকালে মামলা দিয়ে কুষ্টিয়া কোর্টে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশনায় ক্যাম্পাসে গিয়ে তাকে মঙ্গলবার রাতে অস্ত্রসহ আটক করা হয়। পরে বুধবার ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কাব্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হলের আন্তর্জাতিক ব্লকের ৪১৩নং কক্ষে থাকেন। ঘটনার দিন নিজ কক্ষ থেকেই ওই অস্ত্র আনেন বলে জানান তার এক সহযোগী। ওই কক্ষে নিয়মিত রুটিন করে প্রতি রাত ১০টার পর থেকে মাদক সেবন চলে। মাদক নিতে অন্যান্য হল থেকে আরও ৫-৭ জন ওই কক্ষে আসেন। ভোররাত পর্যন্ত চলে মাদক সেবন। সর্বশেষ ছিনতাইয়ের ৫ হাজার টাকা নিয়ে ইয়াবা কিনে রাতে মাদক সেবন করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা তাকে প্রাথমিকভাবে বহিষ্কার করেছি। মামলা ও তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী শৃঙ্খলা কমিটির সভায় তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
#যুগান্তর