নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, ‘পঞ্চম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নির্বাচনি সহিংসতায় ছয়জনের প্রাণহানি, এটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য দুঃখজনক বিষয়।’
বুধবার রাজধানীর নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা যে রিপোর্ট পেয়েছি, তাতে এ ধাপে ৭০ ভাগের বেশি ভোট পড়েছে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঁচামারা ইউনিয়নে ভোট দিয়ে বাড়ি ফেরার সময় দুই প্রার্থীর ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মধ্যে পড়ে আমেনা খাতুন (৫০) নিহত হন। এটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য দুঃখজনক বিষয়। চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ভোট দিয়ে দেড় কিলোমিটার দূরত্বের বাড়ি ফেরার পথে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অংকুর দাস (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বগুড়ার গাবতলীর রামেশ্বপুরে জাকির হোসেন নামের একজন, গাইবান্ধার সাঘাটায় জুমারবাড়ী ইউনিয়নে আবু তাহের এবং চাঁদপুরের কচুয়া ও হাইমচরে নির্বাচনী সহিংসতায় দুজন মারা গেছেন।’
ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা প্রার্থীদের অনুরোধ জানাব, জয়ী বা পরাজিত হলে ফলাফল যেন মেনে নেন। তারা যেন অতি আবেগী না হয়ে যান। এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’
মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার আরও বলেন, ‘তিন হাজার ৭৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আজকে পর্যন্ত শেষ হয়েছে। তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে চার হাজার ১৩৮টির। মোট ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে চার হাজার ৫৭৪টি। ৪৩৬টি ইউনিয়নে সীমানা নির্ধারণ ও মামলা থাকায় সেগুলোতে নির্বাচন করা যাচ্ছে না।’
ইসি সচিব আরও বলেন, ‘প্রিজাইডিং অফিসার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত হওয়ায় নয়টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তাকে (রিটার্নিং কর্মকর্তা) আইন বহির্ভূত কাজের জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশের এসপি গ্রেপ্তার করেছেন। তাদের আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। ওই ইউনিয়নটির নির্বাচন বন্ধ করা হয়েছে। যে ছয়জন মারা গেছেন তারা ভোট দিয়ে যাওয়ার পথে দুই প্রার্থীর সংঘর্ষে মারা গেছেন। এই কয়টি কেন্দ্র ছাড়া পুরো দেশে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যেটুকু হয়েছে, তাতে আমরা বলব, ভালো নির্বাচন হয়েছে। সামনে যে নির্বাচন হবে, সেগুলো আরও ভালো হবে। যে ছয়জন নিহত হয়েছেন, প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা এর দায় নেবেন। আমরা বলছি না, এটির জন্য নির্বাচন কমিশনের দায় নেই। দায় যাবে প্রার্থী ও তার সমর্থকের উপর।’