ads
সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৩:২৪ অপরাহ্ন

এবার রোজার আগে আরেক দফা বাড়লো নিত্যপণ্যের দাম

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১২ মার্চ, ২০২২
  • ৮২ বার পঠিত

রোজার আগে সয়াবিনের দাম বৃদ্ধি নিয়ে দেশজুড়ে তুলকালাম চলছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে আরেক দফা বাড়লো নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম। অর্থাৎ গত এক সপ্তাহে চাল, ডাল, পেঁয়াজ, আলু, আটা, ময়দাসহ ২৪ ধরনের নিত্যপণ্যের দাম নতুন করে বেড়েছে।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত এক সপ্তাহে কেজিতে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের দাম বেড়েছে ২২ শতাংশের বেশি। আর আলুর দাম বেড়েছে ১২ শতাংশের মতো। নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে শুকনো মরিচ, হলুদ ও আদা। রাজধানীর একাধিক বাজার ও পাড়া-মহল্লার দোকানে গিয়ে এ পণ্যগুলোর দাম কেজিতে ২ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। আর ফার্মের মুরগির ডিমের দাম বেড়েছে প্রতি হালিতে ৪ টাকা।

নতুন করে চালের দাম বেড়েছে

রাজধানীর কয়েকটি বাজারে দেখা যায়, দাম বাড়ার তালিকায় চালও রয়েছে। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাঝারি মানের চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩ টাকার মতো। ভালো মানের ও মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকার মতো।

সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে মাঝারি মানের চালের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশের মতো। গত সপ্তাহে ৫৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া চাল শুক্রবার (১১ মার্চ) বিক্রি হচ্ছে ৫৮ টাকা কেজি দরে। এছাড়া গরিবের মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ২ দশমিক ১৩ শতাংশ। অর্থাৎ গত সপ্তাহের ৪৮ টাকা কেজি দরের চাল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভালো মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল তারা বিক্রি করছেন ৬৩ থেকে ৭৫ টাকা কেজি। যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে দুই ২ টাকা বেশি।

রাজধানীর মানিকনগর এলাকার মুদি দোকান ইউসুফ আলী মোটা গুটি স্বর্ণা চাল বিক্রি করছেন প্রতি কেজি ৪৮ টাকা ও মাঝারি আকারের বিআর-২৮ চাল ৫২ টাকা। সরু মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল বিক্রি করছেন ৬৫ টাকা কেজি দরে।

পাশেই বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক আবুল হোসেন বলেন, কেজিতে ২ টাকা বেড়ে মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায় এবং কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭২ টাকায়।

নাগালের বাইরে ভোজ্যতেল

এদিকে আগের মতো চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। বোতলজাত সয়াবিন রাখছেন না দোকানদাররা। বিভিন্ন কোম্পানির পরিবেশকরা তেল নিয়মিত সরবরাহ করছেন না বলে জানিয়েছেন দোকানিরা। ফলে অনেক মুদি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি বন্ধ হয়ে গেছে। আর খোলা সয়াবিন তেল ও পাম সুপার তেল পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে নতুন করে লিটারে দুই টাকা বেড়েছে খোলা পাম তেলের দাম।

রাজধানীর মানিকনগর এলাকার মুদি দোকান ইউসুফ জেনারেল স্টোরে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৭২ টাকা এবং পাম সুপার ১৫৬ টাকা বিক্রি করতে দেখা যায়।

দাম বেড়েছে গরুর মাংসের

গরুর মাংস আগে কেজিপ্রতি ৫৮০ টাকা বিক্রি হলেও গত সপ্তাহে ছিল ৬০০ থেকে ৬২০ টাকা কেজি। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা করে। টিসিবির হিসাবে গত এক সপ্তাহে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ৪ শতাংশের বেশি।

এদিকে খাসির মাংসও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, কেজিপ্রতি ৯০০-১০০০ টাকা। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি ৩২০, বড় লাল মুরগি ২৫০, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

নতুন আরও যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে

ব্যবসায়ীরা বলছেন, সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মসুর ডালের (চিকন দানা) দাম। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। এ ছাড়া নিম্ন আয়ের অনেক মানুষের অ্যাংকর ডালের দামও কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা দরে। চীন থেকে আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। টিসিবির হিসাবে গত এক সপ্তাহে রসুনের কেজিতে দাম বেড়েছে ১৪ শতাংশ। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। অর্থাৎ ৭০ টাকার নিচে দেশি পেঁয়াজ পাওয়া যায় না। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশের মতো। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে। দাম বেড়েছে আটা ও ময়দারও। খোলা আটায় কেজিতে বেড়েছে ৪ টাকা, প্যাকেটজাত ময়দায় কেজিতে ৫ টাকা। পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে প্রতিকেজি খোলা আটা ৪০ টাকা ও প্যাকেটজাত ময়দা প্রতিকেজি ৬২ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। প্রতিকেজি লবণের দাম ৩ টাকা বেড়ে ৩৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।

টিসিবির হিসাবে এক মাস আগে খোলা আটা প্রতিকেজির দাম ছিল ৩৩ থেকে ৩৬ টাকা, এখন সে আটা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর প্যাকেটজাত ময়দার কেজি ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা এখন ৫২ থেকে ৬০ টাকা। অর্থাৎ দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

ফার্মের মুরগির ডিমের দামও হালিতে ৪ টাকা বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে ৩৬ টাকা হালি ও প্রতি ডজন ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। শুক্রবার প্রতি হালি ৪০ টাকা ও প্রতি ডজন ১১৫ টাকায় বিক্রি করা হয়।

এদিকে, গত সপ্তাহে ১৪ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আলু এই সপ্তাহের বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি দরে। টিসিবির হিসাবে, গত এক সপ্তাহে আলুর দাম প্রতিকেজিতে বেড়েছে ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

অস্বস্তি সবজির বাজারে

তেল-পেঁয়াজ থেকে শুরু করে নিত্যপণ্যের উচ্চ দামে নাভিশ্বাস উঠেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে সবজির বাজারেও চলছে অস্থিরতা। এক কেজি পটল কিনতে ক্রেতাদের এখন ১২০ টাকা গুনতে হচ্ছে। পটলের পাশাপাশি একশ টাকার ঘরে রয়েছে বরবটি, ঢেঁড়শ ও করলা। পাশাপাশি অন্যান্য সবজিও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

শুক্রবার (১১ মার্চ) রাজধানীর কয়েকটি বাজারের তথ্য অনুযায়ী, শিম গত সপ্তাহে ৫০ টাকা বিক্রি হলেও এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। রোজা শুরুর আগেই কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা পৌঁছেছে কেজিপ্রতি ৮০ টাকায়। ভালো টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, বেগুন কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের যে লাউ ৬০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে, লেবু প্রতি হালি ৪০ টাকার থেকে ৫০ টাকায় পৌঁছেছে। ফুলকপি প্রতিটি ৫০ টাকা, বরবটি ৮০-১২০ টাকা কেজি, ঝিঙা কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ১০০ টাকা কেজি, উস্তের কেজি ১২০ টাকা, শসা ৬০ ও করলা ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচকলা হালি প্রতি ৪০, এক মুঠো লাল ও পালং শাক ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজার

বাজারে রুই , কাতল বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোলের কেজি বিক্রি ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি।

সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর
ইঞ্জিনিয়ার মোঃ ওয়ালি উল্লাহ
নির্বাহী সম্পাদক
নিউজ রুম :০২-৯০৩১৬৯৮
মোবাইল: 01727535354, 01758-353660
ই-মেইল: editor@sristybarta.com
© Copyright 2023 - SristyBarta.com
Develop By : BDiTZone.com
themesba-lates1749691102