ঢাকায় শ্যামলী পার্ক মাঠে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) আয়োজনে “ওয়ার্ল্ড ওটার ডে” উদযাপন করা হয়। বাংলাদেশসহ বিশ্বের আরও সাতটি দেশে আজ একযোগে দিবসটি পালন করা হয়।
এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এসএমবিসি (SMBC-Sumitomo Mitsui Banking Corporation)-কে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া—জীবাশ্ম জ্বালানির প্রকল্পে তাদের অর্থায়ন জলবায়ু সংকটকে আরও তীব্রতর করছে, যা ওটারসহ আমাদের পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
আয়োজনে পরিবেশ প্রেমীরা “জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ নয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ চাই”, “এসএমবিসি (SMBC) সামিট এলএনজিতে অর্থায়ন করেছে, টার্মিনালটি সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র ধ্বংশ করছে, মৎস্যজীবীদের জীবিকাকে ব্যাহত করছে”, “এসএমবিসি (SMBC) বাংলাদেশে বিনিয়োগকৃত ঋণের পরিমান প্রকাশ কর, সচ্চতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত কর” স্লোগানে ব্যানার ও পোস্টার প্রদর্শনীর মাধ্যমে এসএমবিসির দ্বিমুখী অবস্থানকে তুলে ধরেন। একদিকে তারা ওটারকে ভালোবাসার বার্তা দেয়, অন্যদিকে গ্যাস প্রকল্পে অর্থায়নের মাধ্যমে ওটারসহ বহু প্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে।
SMBC ৪.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। SMBC বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য কমপক্ষে ২৩৮.৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করেছে, কিন্তু নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য কোনও বিনিয়োগ করেনি। SMBC সামিট এলএনজি-এর নির্মাণ ব্যয়ের ৪৩.১১% অর্থায়ন করেছে। টার্মিনালটি সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করে, মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের জীবিকাকে ব্যাহত করে। SMBC কখনও ইআইএ রিপোর্ট বা বাংলাদেশের কোনও প্রকল্পের জন্য প্রদত্ত ঋণের পরিমাণ প্রকাশ করেনি। এটি এসএমবিসির স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার অভাবকে প্রকাশ করে। SMBC এর উচিত পূর্ববর্তী দূষণ এবং নির্গমনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলিকে ১৫০ কোটি টাকা এবং বার্ষিক ৯১ কোটি টাকা এবং ভবিষ্যতের প্রকল্পগুলির নির্গমনের জন্য ১,৫৩৩ কোটি টাকা প্রদান করা। SMBC জ্বালানি ব্যবস্থাকে গণতন্ত্রীকরণের জন্য, জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক অবকাঠামোতে অর্থায়ন বন্ধ করুন এবং অফ-গ্রিড-ভিত্তিক বিতরণযোগ্য নবায়নযোগ্য শক্তিকে সমর্থন করুন। গত আট বছরে, SMBC একটি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আর্থিক পরামর্শ প্রদান করেছে এবং বাংলাদেশে তিনটি জীবাশ্ম জ্বালানি প্রকল্পের জন্য ২৩৮.৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থায়ন করেছে।
বিশ্বজুড়ে জাপান, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানুষ এসএমবিসির কাছে দাবি জানাচ্ছে—জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন সীমিত করো, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়াও, ও আমাদের পৃথিবীকে উষ্ণ করে তুলো না।