কক্সবাজারে ‘নারী পর্যটককে ধর্ষণের’ ঘটনা সারাদেশে যখন সমালোচনার ঝড় তুলেছে, তার মধ্যেই এক স্কুল শিক্ষার্থীকে হোটেলে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠছে পর্যটন জেলাটিতে।
জানা গেছে, কক্সবাজারের কলাতলীতে মামস্ নামে একটি আবাসিক হোটেলে অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে দুইদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। ছাড়া পেয়ে ওই শিক্ষার্থী ৫ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলাও করেছেন। কিন্তু মামলা নথিভুক্ত হওয়ার এক সপ্তাহ পরও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছেন তারা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবারের দাবি, গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পরীক্ষার ফলাফল জেনে বাড়ি ফেরার পথে উত্তর নুনিয়ারছড়ার নজরুল ইসলামের পুত্র মোহাম্মদ আশিকের নেতৃত্বে কয়েকজন তাকে অপহরণ করেন। পরে ১৫ ডিসেম্বর রাতে তাকে একটি গাড়িতে করে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে যায়। পরবর্তীতে আহত শিক্ষার্থীকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে কক্সবাজার সদর থানায় এজাহার দায়ের করেন এবং ১৮ ডিসেম্বর পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্তরা একটি চিহ্নিত মাদকদলের সদস্য। অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ডিবি পুলিশের এক অভিযানে দুই কোটি টাকাসহ ১৪ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিল। ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তরা ইয়াবা পাচারকারী ফারুকের আত্মীয়।
অভিযুক্ত আশিকের ভাবি এবং ইয়াবা পাচারকারী ফারুকের স্ত্রী শাহিনা আকতার জানান, ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আশিকের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তারা বিয়ে করতে চাইলেও ছাত্রীর পরিবার মানছে না।
এদিকে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে দুইদিন আটকে রাখা মামস্ নামের ওই আবাসিক হোটেলের দায়িত্বরত ম্যানেজার মো. শাহীন জানান, ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এ নামের কেউ আমাদের হোটেলে ছিল না।
তিনি জানান, হোটেলটিতে সিসিটিভি থাকলেও ওই তারিখের ফুটেজ ডিলেট হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হালিম বলেন, মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এ মুহুর্তে তিনি নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এর আগে, গত বুধবার কক্সবাজার শহরের কলাতলীর জিয়া গেস্ট ইন হোটেল থেকে এক নারী পর্যটককে উদ্ধার করে র্যাব। ওই নারীর অভিযোগ, আশিকুল ইসলাম আশিক নামের এক যুবকের নেতৃত্বে কয়েক দফায় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তিনি। এরমধ্যে এ ঘটনায় চার জনের নাম উল্লেখ করে ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অভিযুক্ত হোটেল ম্যানেজার ছোটনকে চারদিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।