শোকের মাস আগস্টে কালো ব্যাজ ধারণ না করার ঘটনায় গাইবান্ধার পলাশবাড়ী শাখার সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রওশন জামিলের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে। সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই শাখায় তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। সোনালী ব্যাংকের গঠিত দুই সদস্যের কমিটি এই তদন্ত করে।
কমিটির সদস্যরা হলেন– সোনালী ব্যাংক গাইবান্ধার প্রিন্সিপাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক মতিউর রহমান সরকার এবং রংপুরের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ হেলালী।
তদন্ত কমিটির দুই সদস্য সোনালী ব্যাংক পলাশবাড়ি শাখায় পৌঁছে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন। তদন্তের শুরুতেই তারা লিখিত অভিযোগকারী পলাশবাড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুতের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করেন। এ ছাড়া এ সময় আরও কয়েকজনের কাছ থেকেও লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করে তদন্ত কমিটি।
এর আগে, গত বছরের শোকের মাস আগস্টে কালো ব্যাজ ধারণ না করার ঘটনায় রওশন জামিলের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী এবং সোনালী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন পলাশবাড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ।
লিখিত অভিযোগে মোকছেদ উল্লেখ করেন, শোকের মাস আগস্টে পলাশবাড়ি উপজেলার মাসিক সভায় কালো ব্যাজ ধারণ না করে উপস্থিত হন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রওশন জামিল। সভা চলাকালে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপক রওশন জামিলের কাছে কালো ব্যাজ কেন ধারণ করা হয়নি তা জানতে চান। সে সময় রওশন জামিল বলেন ‘কালো ব্যাজ ধারণ করার আমার অভ্যাস নেই’। তার এমন কথায় সভায় উপস্থিত অনেকেই ক্ষিপ্ত হন এবং প্রতিবাদ জানান।
এ ছাড়া লিখিত অভিযোগে রওশন জামিলের বিরুদ্ধে গ্রাহক হয়রানিসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা উল্লেখ করা হয়।
তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনালী ব্যাংকের গাইবান্ধা প্রিন্সিপাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক মতিউর রহমান সরকার সাংবাদিকদের জানান, ব্যাংক ব্যবস্থাপক রওশন জামিলের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। তদন্তের সময় অভিযোগকারী ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। তদন্তের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে অভিযুক্ত রওশন জামিলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, তদন্তের সময় লিখিত বক্তব্য দিয়ে ব্যাংক থেকে বের হওয়ার সময় অভিযুক্ত রওশন জামিল ভুক্তভোগীদের হুমকি দেন বলে অভিযোগ করেন মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ। তিনি বলেন, তদন্তের সময় ব্যাংক ব্যবস্থাপক রওশন জামিল ভুক্তভাগীদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন। এ সময় উপস্থিত ভুক্তভোগীসহ গ্রাহকদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে তাৎক্ষণিক তদন্তকারী কর্মকর্তারা রওশন জামিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।