ইংরেজি দৈনিক দি ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক মাহফুজ আনাম গণতন্ত্র দিবসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে যে নিবন্ধ লিখেছেন, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘সেখানে (নিবন্ধে) অসৎ উদ্দেশ্যে অসংলগ্ন মিথ্যা কথা বলা হয়েছে। ’
শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ওয়ান ইলেভেনের গণতন্ত্র ধংসের প্রধান কুশীলবদের অন্যতম হোতা এবং সেনা সমর্থিত মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিনের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিত মাহফুজ আনাম এই নিবন্ধে বেগম জিয়াকে নিয়ে তিনি সরাসরি ও ইঙ্গিতে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। গণতন্ত্রের কথা বলতে গিয়ে তিনি ইনিয়ে-বিনিয়ে বারবার বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন, যা হলুদ সাংবাদিকতা ও বর্তমান মিডনাইট সরকারের নির্লজ্জ স্তুতিরই সমতুল্য।
তিনি আরও বলেন, মাহফুজ আনাম ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা নিয়ে তার প্রবন্ধে যা লিখেছেন তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিষদবর্গের হাইপার-প্রপাগান্ডা ও কলুষিত মিথ্যাচারের প্রতিধ্বনি মাত্র। মিথ্যা বানোয়াট গল্প সাজিয়ে সংবাদ পরিবেশনের দায়ে বার বার ক্ষমা চেয়ে এখন সরকারের কাছে সাধু সাজার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন তিনি। তার লেখালেখির ভিশন-মিশন হলো বিএনপির বিরুদ্ধে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কাহিনী প্রকাশ করা। ভয়ে হোক বা উচ্ছিষ্ট ভোগিচ্ছায় হোক গণতন্ত্রহীন ও বেপরোয়া আচরণে লিপ্ত আওয়ামী লীগ সরকারকে খুশি করাই এখন তার আরাধ্য। মাহফুজ আনাম এখন আওয়ামী নব্য নাৎসিবাদের উপাসকে পরিণত হয়েছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, নিজেকে কথিত ‘প্রতিষ্ঠানতুল্য সাংবাদিক’ দাবি করা সাংবাদিকতার ‘এথিকস’ শেখানো কে এই মাহফুজ আনাম? কী তার আমলনামা? গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা সাজা এই মুখোশধারী মাহফুজ সাহেবের পিতা ছিলেন বহুমাত্রিক প্রতিভায় দীপ্তিমান সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক-সম্পাদক সর্বজনের শ্রদ্ধেয়। সেই স্মরণীয় আবুল মনসুর আহমদের নাম তিনি ভূলুণ্ঠিত করছেন। মাহফুজ আনামদের সারথি হয়ে তথাকথিত সুশীল শ্রেণির বেশ কয়েকজন এ দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করে এক-এগারোর অসাংবিধানিক শাসন প্রতিষ্ঠার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিল। স্বচ্ছ সাংবাদিকতা নয়, বিদেশি অর্থদাতা প্রভু ও দেশীয় গোয়েন্দাদের এজেন্ট হিসেবেই কাজ করেছেন মাহফুজ আনাম।
রিজভী বলেন, মাহফুজ আনামদের বাংলাদেশে গণতন্ত্র ধ্বংস এবং ফ্যাসিবাদের উত্থানে ভূমিকা ও অপতৎপরতা কলংকিত ইতিহাস হয়ে থাকবে। বিএনপি বিপুল বিজয়ে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ করে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যার মাধ্যমে অসাংবিধানিক শাসন কায়েম করার নীলনকশা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেন এই মাহফুজ সাহেবরা। কারণে অকারণে তাদের প্রায় প্রতিদিন দেখা যেত জাতির সামনে নানা সবক নিয়ে হাজির হতে। তাদের নেতৃত্বেই তখন নানা ইস্যু বানিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির পালে হাওয়া দেয়া হয়।