স্বামী-সন্তান নিয়ে খুলনায় গিয়ে নিজের বোনকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপি, এমন অভিযোগ উঠেছে। তার বোন ফিরোজা পারভীন এমন অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ফিরোজা বাংলানিউজকে বলেন, পপির সঙ্গে আমাদের সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ। সোমবার সাংবাদিকদের সামনেই স্বামী নিয়ে বলে গেছে আমাকে মেরে ফেলবে। পপির স্বামীর নাম আদনান উদ্দিন কামাল। একমাত্র ছেলে আয়াতের বয়স সাড়ে ৩ বছর হবে। কবে বিয়ে করেছে তা আমরা জানি না।
তিনি আরও বলেন, পপি দাবি করে আদনান তার স্বামী। জমি দখল করতে এলে স্বামী না বললে তো গণপিটুনি খাবে। পপি জমি দখলের জন্য বিদ্যুতের মিটার বে-আইনীভাবে তার নামে নিয়ে নিয়েছে। ওয়াসার বিল তার নামে নিয়ে নিয়েছে। অনেক জায়গার কাগজপত্র তার নামে করেছে।
এর আগে গতকাল সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সোনাডাঙ্গা থানায় পপির বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ফিরোজা পারভীন। জিডিতে তিনি তার বোনের স্বামী আদনান উদ্দিন কামালের নামও উল্লেখ করেছেন। মূলত এরপরই পপির স্বামী ও সন্তানের কথা গণমাধ্যমে চাউর হয়।
জিডি ও হুমকি প্রসঙ্গে ফিরোজা আরও বলেন, আমরা চার বোন, দুই ভাই। পপি সবার বড়। সে আমাদের বাবার জমি দখলের চেষ্টা করছে অনেক বছর ধরেই। বাবার মৃত্যুর পর থেকেই আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি পপির মাধ্যমে। পপি ছাড়া আমরা সবাই এক। আবাসিক এলাকায় আমাদের হোল্ডিং নম্বর ৩৮/২। গতকাল থানায় জিডির পর আর কোনো হুমকি এখনো দেয়নি।
একটি সূত্রে জানা গেছে, পপি বর্তমানে স্বামী-সন্তান নিয়ে খুলনায় রয়েছেন। তারা ধানমণ্ডিতে থাকেন। পপির স্বামী একটি গ্রুপ অব প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। এ ছাড়া তার জাহাজের ব্যবসা রয়েছে। তিনি লালবাগ কাজী রিয়াজ উদ্দিন রোডের বাসিন্দা। ২০২১ সালের অক্টোবরে রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন পপি।
জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা জিডির বিষয়ে তদন্ত করছেন।
জিডিতে ফিরোজা উল্লেখ করেছেন, পৈতৃক জমি দখলে নিতে স্বামী আদনান উদ্দিন কামাল, কল্লোল মজুমদার ও শিপনসহ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিববাড়ি এলাকার ভাড়াটিয়া বাড়ির সামনে যান পপি। তাদের বাধা দিলে পপি ও তার স্বামী মিলে ফিরোজা পারভীনকে হুমকি দেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে পপির মা মরিয়ম বেগম বলেন, আমার মেয়েটা আগে ভালোই ছিল। বিয়ের পর পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে তার। স্বামীর প্ররোচনায় আমাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তার বাবার জমি দখলের চেষ্টা করছে। আমাদের প্রতিনিয়ত হয়রানির মধ্যে রেখেছে। এই বয়সে আমরা কোথায় যাব?
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পপির সঙ্গে কথা বলার জন্য নানাভাবে চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, কোনোভাবেই তার সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাডাঙ্গা থানার এসআই গোলাম মোস্তফা বলেন, বিষয়টি পপিদের পারিবারিক। সে কারণে দুই পক্ষকে ডেকে কথা বলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে। এরপরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘কুলি’ সিনেমার মধ্য দিয়ে পর্দায় অভিষেক হয় পপির। প্রথম সিনেমা দিয়ে সাফল্য পান। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক সিনেমায় কাজ করেছেন। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেছেন তিনি।