গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার মান্দ্রা-রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় শিক্ষকের শাস্তি দাবিতে ক্লাশ বর্জন করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী। বিক্ষোভের সময় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনকে গণধোলাই দিয়েছেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার উপজেলার মান্দ্রা-রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, মান্দ্রা-রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনে গণিত বিভাগের শিক্ষক ও ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের ভাই সাইফুদ্দিন কাজল দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। সম্প্রতি ওই কুপ্রস্তাবের কয়েকটি অডিও শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মাঝে ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজলের শাস্তির দাবি করে ক্লাশ বর্জন করে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এ সময় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বিদ্যালয়ে এলে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
মান্দ্রা-রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরভী, আশা লতা হাজরা, তিনা বাড়ৈ, পিঙ্কি বিশ্বাস বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের ভাই এ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন (কাজল) দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বিভিন্নজনকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। প্রধান শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন স্যারকে এ ঘটনা জানালে তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। তাই আমরা ক্লাশ বর্জন করে ওই শিক্ষক সাইফুদ্দিন কাজলের শাস্তি দাবি করে বিক্ষোভ করেছি। যতদিন পর্যন্ত শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন কাজলের শাস্তি না হবে আমরা ততদিন পর্যন্ত ক্লাশ বর্জন করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাব।
মান্দ্রা-রাধাগঞ্জ ইউনাইটেড ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক হাসান মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, আমার ভাই এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক কাজলের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ পেয়ে ছিলাম; কিন্তু বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নুরুজ্জামান মিয়া এলাকায় না থাকায় সাইফুদ্দিন কাজলকে বরখাস্ত করতে পারিনি। অ্যাডহক কমিটির সভাপতি নুরুজ্জামান মিয়া এলাকায় এলে সাইফুদ্দিন কাজলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে গেছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা সিদ্দিক নুর আলম বলেন, ছাত্রীকে কুপ্রস্তাবের ঘটনায় উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার এসএম শাহজাহান সিরাজকে প্রধান করে ১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।