দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে করোনার টিকা সিনোভ্যাক্সের অর্ধপূর্ণ তিনটি ও চারটি খালি ভায়াল উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ওই দুটি ঘটনা ঘটে।
গতকাল শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ বিষয়ে টিকা গ্রহণে স্বীকারোক্তি দেওয়া এক ব্যক্তির ভিডিও ফুটেজ ও অন্য একজনের অডিওবার্তা বিভিন্ন ব্যক্তির মুঠোফোনে ছড়িয়ে পড়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাও বিষয়টি অবগত হয়েছেন।
ভিডিও ফুটেজ ও অডিও বার্তায় টেংরা গ্রামের মৃত সিরাজুল হকের ছেলে আজিজুল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে চেষ্টা করেও তিনি টিকাকেন্দ্রসমূহ থেকে কোভিড-১৯ এর টিকা নিতে পারেননি। পরে অভিযুক্ত তাকে ২০০ টাকার বিনিময়ে শনিবার ওই টিকা প্রদান করেছেন।
এদিকে একই গ্রামের গিয়াস উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, তার বাড়ির আটজন সদস্যকে টাকার বিনিময়ে অভিযুক্তের কাছ থেকে টিকা নিয়েছেন। একই গ্রামের খোরশেদ আলমও একই অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত মোফাজ্জল হোসেন মানিক শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী পদে তেলিহাটি ইউনিয়নে কর্মরত। উপজেলায় মুলাইদের রঙ্গিলা বাজার এলাকায় টাকার বিনিময়ে করোনার টিকা দেওয়ার সময় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে করোনার টিকা সিনোভ্যাক্সের অর্ধপূর্ণ তিনটি ও চারটি খালি ভায়াল উদ্ধার করা হয়েছে। আটককৃত জাহাঙ্গীর আলম গার্মেন্টস ঐক্য ফোরামের শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি।
আটক জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের নূর ইসলামের ছেলে এবং সুলতানা পারভীন (১৯) একই উপজেলার মাওনা বাজার এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। এলাকাবাসীর সহায়তায় অভিযুক্তদেরকে আটক করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে রোববার মধ্যরাতে একটি মামলা দায়ের করেছে। আটককৃতদের রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন যাবত জাহাঙ্গীর রঙ্গিলা বাজার এলাকার সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নিয়ে করোনার টিকাকার্ড সংগ্রহ করেন। পরে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে রঙ্গিলা বাজার এলাকায় জাহাঙ্গীরের ওই সংগঠনের অফিসে বসে টিকাকার্ড দেওয়া মানুষদের টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু করেন। বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে এলে জাহাঙ্গীরসহ ওই নারীকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।
জেলা ইপিআই প্রযুক্তিবিদ আমজাদ হোসেন জানান, কোভিড টিকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রচলিত প্রক্রিয়ায় ২৪ ঘণ্টা বাইরে সংরক্ষণ করলে স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা থাকে। খোলা হয়ে থাকলে ১২ ঘণ্টা স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা থাকে।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণয় ভূষণ দাস গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভিডিও ফুটেজ ও অডিওবার্তা তিনি শোনেছেন। অভিযুক্ত তার কাছে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ওই বার্তাগুলোতে প্রাথমিকভাবে তার অংশগ্রহণ পাওয়া যায়নি। এর জন্য অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন। টাকার বিনিময়ে করোনার টিকা বিক্রির বিষয়টি শুনেছি। তারা এ টিকা পেল তা খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, এলাকাবাসীর সহায়তায় অভিযুক্তদেরকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে রোববার মধ্যরাতে একটি মামলা দায়ের করেছে। আটককৃতদের রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।